৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের এই দিনে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। স্বাধীন বাংলার আকাশে উড়ে বিজয়ের পতাকা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিরামপুর উপজেলার রয়েছে গৌরবগাঁথা ইতিহাস।
মুক্তিযোদ্ধারা বিরামপুরকে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ঘোড়াঘাট রেলগুমটি, কেটরা শালবাগান, ভেলারপাড় ব্রীজ, ডাক বাংলা ও পূর্বজগন্নাথপুর মামুনাবাদে বাঙ্কার বসিয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকতেন। পাকসেনারা ৪ ডিসেম্বর বিরামপুর পাইলট স্কুলের সম্মুখে ও ঘাটপাড় ব্রিজে প্রচন্ড শেলিং করে ভাইগড় গ্রাম দিয়ে তীরমনিতে ৪টি শেল নিক্ষেপ করে। দেশ স্বাধীন করার জন্য আমাদের দামাল ছেলেরা যৌবনের দুরন্ত সময়ে দেশ মাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে শত্রুদের কবল থেকে আমারদের বিরামপুরকে মুক্ত করে।
স্বাধীনতা যুদ্ধে ৭ নং সেক্টরের মেজর নাজমুল হুদা ও মেজর নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভারতের কালিয়াগঞ্জ তরঙ্গপুর ক্যাম্পে দেশ ও মাতৃকার টানে ২৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। যুদ্ধে অত্র উপজেলায় ২০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পঙ্গু হন ০২ জন এবং যুদ্ধে মারাত্মক ভাবে আহত হন ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা।
বিরামপুরের গোহাটির কূয়া, ঘাটপাড় ব্রীজ, ২নং রাইচ মিলেরর কূয়া বদ্বভূমি হিসাবে পরিচিত। যুদ্ধ চলাকালীন পাক হানাদার বাহিনী গণহত্যা করে শহীদদের লাশ এইসব স্থানে পুঁতে রাখে।
আজও নির্মিত হয়নি বিরামপুর উপজেলার কোথাও স্মৃতিস্তম্ভ।
উল্লেখ্য যে, কেটরাহাটে লোমহর্ষক ও সম্মুখ যুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা এবং ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর বিরামপুর শত্রুমুক্ত করে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে ৬ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১১টায় বিরামপুর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।