স্ত্রী শাহানাজ পরভীনকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন, প্রাবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়া করে অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল করায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনালে মামলা ও অর্থ আত্মসাৎসহ ৪টি মামলা হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছে আলোচিত মাগুরা নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী আহসানুল কবির টিটু। তার এই খুঁটির জোর কোথায়? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ সুধীমহলে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, শৈলকুপা উপজেলার কোর্টপাড়া এলাকার মৃত গোলাম মজনুর ছেলে আহসানুল কবির টিটুর সাথে আবাইপুর ইউনিয়নের পাঁচপাখিয়া গ্রামের মৃত হাফিজুর রহমানের মেয়ে শাহানাজ পারভীন এর বিয়ে হয়। ১০ বছর সংসার জীবনে তাদের ২টি সন্তান রয়েছে। বিয়ের ৬ বছরের মাথায় আহসানুল কবির টিটু’র স্ত্রী শাহানাজ পারভীনের ভাইয়ের বউ শোফালী খাতুনের সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। এরপর থেকেই বিভিন্ন বাহানায় চলতে থাকে স্ত্রী শাহানাজ পারভীনের উপর নির্যাতন। দাবী করতে থাকে যৌতুক হিসাবে ১০ লাখ টাকা। সন্তানদের ভবিষৎতের কথা ভেবে স্ত্রী শাহানাজ ভাইদের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা এনে দেন টিটুকে। তবুও বন্ধ হয়না টিটুর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। গত ৩০-১০-২১ ইং তারিখে যৌতুকের বাকি ৪ লাখ টাকার জন্য নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে বেধড়ক মারপিট করে ঘরে আটকে রাখে টিটু। হাসপাতালেও তাকে যেতে দেওয়া হয়না। পরে কৌশলে শাহানাজ পারভীন তার ভাইদের খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এঘটনায় শাহানাজ পারভীন বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ (গ) ধারায় মামলা করেন।
মামলা নং ৬,তারিখঃ-০৩/১১/২০২১ ইং। এরপর থেকেইে যৌতুক ও পরকীয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শৈলকুপার কোটপাড়াসহ ঝিনাইদহ শহরে। বিভিন্ন মহল, এলাকায় ও চায়ের দোকানে দোকানে এখন গল্পশল্পের খোরাক হয়ে দাড়িয়েছে টিটুর পরকিয়ার। ফাঁস হয়ে যায় অন্তরঙ্গ মেলামেশার ছবি ও ভিডিও।
শাহানাজ পারভীন বলেন, আহসানুল কবির টিটু ও শেফালী খাতুন পরকীয়ায় জড়িয়ে আমার সুখের সংসার জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিয়েছে। আমার সন্তান দুটো নিয়ে আজ আমি বড় অসহায়। তিনি আরো বলেন, আমি ও আমার ভাই বাদী হয়ে টিটু ও শেফালীর বিরুদ্ধে ৪টি মামলা করেছি এরপরও টিটু তার অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়তই অফিস করছেন ও আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। আমি ওই লম্পটের বিচার চাই।
এদিকে আহসানুল কবির টিটু সাতবিলা কুলচারা গ্রামের আনোয়ার মন্ডলের মেয়ে শেফালী খাতুনের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে শারীরিক মেলামেশার ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এঘটনায় শেফালীর স্বামী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ (সংশোধন/০৩) এর ৯ (১) ধারা এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন ২০১২ এর ৮(১)(২)(৩) মোতাবেক মামলা করেন।
মামলার বাদী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় থাকতাম, আহসানুল কবির টিটু আমার ভগ্নিপতি হবার সুবাদে আমার বাড়ীতে যাওয়া আসা ছিল। আমি বাড়ীতে না থাকার সুযোগে স্ত্রী শেফালী খাতুনকে লম্পট টিটু বিভিন্ন ভাবে কু-প্রস্তাব দিত এবং তাকে বিয়ে করবে বলে ফুসলাতো । একপর্যায়ে বাড়ীতে কেউ না থাকায় গত ১০-৫-২১ ইং তারিখ রাতে আমার স্ত্রী শেফালীকে প্রথমে জোরপূবর্ক ধর্ষণ করে এবং গোপনে ভিডিও ও ছবি তোলে। এরপর থেকেই এই ভিডিও ও ছবি ভাইরাল করার ভয় দেভিয়ে ব্লাকমেইল করে প্রতিনিয়তই শারীরিক মেলামেশা করতে থাকে এবং আপত্তিকর মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও করে। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী শেফালীকে ব্লাকমেইল করে টিটু বলে, তোর স্বামীর কাছ থেকে টাকা পয়সা এনে দিবি নয়তো এসব ভিডিও,ছবি নেটে ছেড়ে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিত।
গত ২৫-৭-২১ তারিখে আপত্তিকর মেলামেশার অনেক ভিডিও ও ৫০টি ছবি টিটু আমাকে ইমোর মাধ্যেমে পাঠায়। ফলে আমি মানসিক ভাবে ভেড়ে পড়ি ও বিদেশে কাজকর্মে মনোনিবেশ করতে না পেরে দেশে ফিরে আসি। এসে জানতে পারলাম আহসানুল কবির টিটু আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভিডিও প্রচারের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, আহসানুল কবির টিটু শুধু আমার সংসার ভাঙেনি আমার বোন শাহানাজ পারভীনের সংসার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। আমি এই লম্পটের কঠিন বিচার চাই।