পাহাড়ে ঘেরা নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে মাঝে গড়ে উঠা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সাগর পাড়ের এই বিশ্ববিদ্যালয় একেবারে প্রথম ব্যাচ থেকেই ফেনীর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল। সেই ক্যাম্পাসে লালিত ফেনীর অনকেই নেতৃত্ব দেয়া থেকে শুরু করে সেরা ফলাফল আর কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কর্মজীবনের ব্যস্থতায় ইচ্ছা থাকলেও ক্যাম্পাসের সেই শাটল ট্রেন আর জারুল তলায় চলে যাওয়া সম্ভব হয় না। আবার ক্যাম্পাসে গিয়ে শাটল ট্রেন আর জারুলতলা পেলেও পাওয়া যাবে না সেই বন্ধু, অগ্রজ আর অনুজদের। সবকিছু একই সাথে পাওয়া গেলে কেমন হয়? নিশ্চয় মনে আনন্দে দোলা দিবে।
সেই রকমই এক আনন্দের দোলা দেয়ার উপলক্ষে সৃষ্টি হয়েছিল বন্ধের দিন শুক্রবারে (১৯ নভেম্বর)। ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের উত্তর যশপুর গ্রামের পোর্টল্যান্ড এগ্রোপার্কে পোর্টল্যান্ড গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সির (বিএনএ) সম্পাদক, চবি এ্যালমনাই এসোসিয়েশনের সদস্য ও চবি লোকপ্রশাসন এ্যালমনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক. বিশিষ্ট শিল্পপতি মিজানুর রহমান মজুমদারের সার্বিক তত্ত¡াবধানে ও চিটাগাং ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্ট ক্লাব ফেনীর সহযোগিতায় ও চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি ৮১ ব্যাচের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে সেদিন এসে জড়ো হয়েছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের ৮৩ ব্যাচসহ বিভিন্ন ব্যাচের তিনশতাধিক বন্ধু আর তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বন্ধু, অগ্রজ আর অনুজদের এই মিলনমেলার স্থলকে এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যা দেখে মনে হবে আছি সেই চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই। পোর্টল্যান্ড এগ্রোপার্কের মধ্যে সাজানো হয় বিশ^বিদ্যালয়ের রেল স্টেশন এর আদলে মঞ্চ। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে শাটল ট্রেনের ইঞ্জিন। পিছনের বগি অদৃশ্য। আর ব্যাগ গ্রাউন্ডে জারুল তলার সেই জারুল গাছ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই নান্দনিক লগো ছিল সর্বত্র। লগো দিয়ে বানানো হয় সেলফি স্ট্যান্ড। সেই মনোরম পরিবেশ সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কিভাবে যে সময় চলে গেল তা কেউ টেরই ফেলেন না। মিলন মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলবেঁধে আসেন চবিয়ানরা। সেখানে ছিল না বয়সের কোন বাঁধা। ছিল শুধুই আনন্দ আর উল্লাস। ছিল শুধুই বন্ধুত্বের আবাহন আর মিলনের আনন্দ। সবার মাঝেই ছিল একই অনুভূতি। সেটি হল আমরা বার বার এভাবে মিলতে চাই। কর্মব্যস্ত জীবনের মাঝেও সবকিছু রেখে আমরা এক মোহনায় বার বার চলে আসতে চাই। চমৎকার সব স্মৃতিচারণে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে অনুষ্ঠানস্থল। এসময় সবাইকে ¯^াগত জানান চবিয়ান মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান আবু সাঈদ মোঃ মহি উদ্দিন বুলবুল। একে একে স্মৃতিচারন করেন কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল অব বাংলাদেশ মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সাবেক সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল জলিল, কৃষি মন্ত্রনালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব ওমর ফারুক চৌধুরী, স্ট্যানর্ডড গ্রæপের পরিচালক তোফাজ্জেল আলী তপু, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (অবঃ) হোসনে আরা চৌধুরী প্রমুখ। সুন্দর চমৎকার একটি অনুষ্ঠান দেশে চবিয়ানরা অভিভূত হয়েছেন। তারা আয়োজন এবং ফেনী ও ছাগলনাইয়াবাসীকে এরকম একটি সুন্দর অনুষ্ঠানের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এসময় বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক ও বর্তমান সচিব, সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে মধ্যাহৃ ভোজ, বিকেলে স্মৃতিচারণ, সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রাতে ডিনারের মাধ্যমে শেষ হয় মিলন মেলাটি।