করপোরেট কর বিষয়ক বৈশ্বিক এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি-২০ শীর্ষ নেতারা। এর ফলে বৃহৎ ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত লভ্যাংশের ওপর ন্যূনতম শতকরা ১৫ ভাগ আয়কর বা ট্যাক্স দিতে হবে। রোববার (২১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বিশ্বের বড় বড় বহুজাতিক সংস্থাগুলো কম আয়করের সুযোগ নিয়ে তাদের লভ্যাংশ আবার ব্যবহার করছে। আর এই বিষয় নিয়েই সৃষ্ট উদ্বেগের কারণেই বিশ্বনেতারা করপোরেট কর আরোপ বিষয়ক ঐতিহাসিক চুক্তিতে সম্মত হন। এবারের জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া সকল নেতাই এই কর আরোপের বিষয়ে একমত হন বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইতালির রোমে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে দুইদিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলন। করোনাভাইরাস মহামারির বড় ধাক্কা পেরিয়ে প্রথমবারের মতো শিল্পোন্নত দেশগুলোর সরকারপ্রধানরা একে অন্যের মুখোমুখি হয়েছেন। স্বভাবতই করোনা মহামারি সংকট ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইস্যুটি সেখানে প্রাধান্য পাচ্ছে।
জি-২০ সম্মেলনের পরপরই স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে বসছে কপ-২৬ এর আসর। তাই জলবায়ু সংকট, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে নীতিনির্ধারণী আলোচনাগুলোও উঠে আসবে জি-২০ সম্মেলনে। পাশাপাশি দীর্ঘ বিরতির পর বৈশ্বিক নেতারা নিজেদের মধ্যে দেখা হওয়ার প্রেক্ষিতে পারস্পরিক সম্পর্কও ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না।
যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতে মিলিত হবেন জার্মানির অন্তবর্তীকালীন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। এছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন।
বিশ্বের শিল্পোন্নত ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-২০’র সদস্য হিসেবে রয়েছে ১৯টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে সদস্য সবগুলো দেশের সরকারপ্রধানরা সম্মেলনে সশরীরে অংশ নিলেও রোমে যাননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অবশ্য সশরীরে রোমে না থাকলেও তারা ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সম্মেলনে অংশ নেবেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, করপোরেট কর বিষয়ক বৈশ্বিক এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি সম্মেলনে উত্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার সম্মেলনের প্রথমদিন সবগুলো সদস্য দেশ এই চুক্তিতে সম্মত হয়। আর রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে সেটি অনুমোদন হতে পারে। আর এই চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২৩ সালের মধ্যে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন এই চুক্তিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির ‘জটিল সময়ে’ ঐতিহাসিক চুক্তি বলে উল্লেখ করেছেন। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সেগুলোর সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা উপকৃত হবেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনেক বড় বড় সংস্থাকে অধিক পরিমাণ কর দিতে হবে।’