অবহেলায় অযত্নে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার তেলিপাড়ার ঐতিহাসিক সুজা মসজিদ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মসজিদের মূল কাঠামো।উপজেলা সদর থেকে ১১ মাইল উত্তরে মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিণে
হলাইজানা গ্রামের তেলিপাড়া নামক স্থানে কালের স্বাক্ষী প্রাচীণ মসজিদটির অবস্থান।স্থানীয়দের মতে পাঁচ শ’ বছর আগে জিনেরাই নাকি রাতারাতি মসজিদটি নির্মাণ করেছে।সুর মসজিদের নির্মাণকাল নিয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত। কেউ কেউ এ মসজিদকে সৌর মসজিদ বলে ডেকে থাকেন। আবার কেউ বলেন সুরা মসজিদ। কারো কাছে এ মসজিদ শাহ সুজা মসজিদ নামেও পরিচিত। একেকজনের কাছে একেক নামে পরিচিত ঐতিহাসিক এ নির্দশনটি। মসজিদটির কারুকাজ ও শৈলী দেখে কারও ধারণা এটি সুলতানি আমলে পঞ্চদশ শতকের শেষদিকে বানানো।মসজিদটির দৈর্ঘ্য ২২ ফুট ও প্রস্ত ১২ ফুট, ভিতরের প্রস্থ ৮ ফুট। দেয়ালে রয়েছে তিনটি দরজা, আর পশ্চিম দেয়ালে আছে তিনটি মেহেরাব। মসজিদটিতে তিনটি গোলাকার ছোট গম্বুজ। ইট দিয়ে নির্মিত মসজিদের দেওয়ালে নিপুন হাতে তৈরি বিভিন্ন দৃশ্য খোদাই করা, দেয়ালে অসংখ্য খোপকাটা টেরাকোটার অলংকরণ আছে।দেয়ালের সুসজ্জিত নকশা বিমোহিত করে দর্শনার্থীদের। উপরে বর্গাকার গম্বুজ।মসজিদটির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে কোনো কমতি রাখেনি নির্মানকারীরা। এর নির্মান শৈলী দেখে অভিজ্ঞ মহলের ধারনা এটি মোগল আমলে নির্মিত।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান , আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের কাছ থেকে এই মসজিদের ইতিহাস শুনে আসছি। সুজা মসজিদের বয়স ৪০০ বছরেরও বেশি হবে। এটি সুলতানি আমলের মসজিদ। দাদাদের মুখ থেকে শুনেছি মসজিদটি আল্লাহর তরফ থেকে রাতারাতি নির্মাণ করা হয়েছে।
হলাইজানা মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. শামছুল হক প্রতিবেদক আর কে ওসমান আলীকে বলেন, মসজিদটি দীর্ঘকাল পূর্বে নির্মিত হলেও সেখানে নামাজ আদায় হয়না। অর্থাৎ বহু বছর থেকেই মসজিদটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে মসজিদ চত্বরে বছরের দুই ঈদের নামাজ ছাড়া কিছুই হয় না। প্রাচীন এই মসজিদটি সম্পুর্ন অরক্ষিত অবস্তায় পরে রয়েছে। বর্তমানে মসজিদের দেওয়ালের বাইরে কারুকার্যসহ মসজিদের দেওয়ালগুলি নষ্ট হতে চলেছে।
তেলিপাড়া গ্রামের মো. রাহেনুল ইসলাম বলেন, এলাকার মুরুব্বিরা বলেন মসজিদটি এক রাতেই নির্মিত হয়েছে। তবে কবে কখন কে এ মসজিদটি নির্মান করেছে তা কেউ জানেন না। মসজিদটি সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। প্রাচীন এ মসজিদ টি রক্ষায় যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে এমনটি প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।