চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার নাহারা গ্রামের সূত্রধর বাড়ির কালী মন্দিরের প্রায় ৮টি প্রতিমা গতকাল ২৭ই সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কে বা কাহারা ভাংচুর করে।ভাংচুর করা ৮টি প্রতিমার মধ্যে ২টি প্রতিমার মাথা কালী মন্দির থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত তেতৈয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মসজিদের মিম্বারে ফেলে রাখে।
নাহারা সূত্রধর বাড়ির মন্দির কমিটির সভাপতি পবিত্র সূত্রধর বলেন,আমরা গতকাল ২৭ই সেপ্টেম্বর সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত মন্দির প্রাঙ্গনে ছিলাম।পরের দিন সকাল বেলা উঠে দেখি আমাদের কালি মন্দিরে অবস্থিত কালী মায়ের প্রতিমাসহ প্রায় ৮টি প্রতিমা ভাংগা।তার কিছুক্ষণ পর শুনতে পাই আমাদের বাড়ির কালী মন্দির থেকে প্রায় ৫০০মিটার দূরত্বে অবস্থিত তেতৈয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মসজিদের মিম্বারে নাকি ২টি প্রতিমার ভাংগা অংশ পাওয়া গিয়েছে।আমরা সাথে সাথে এলাকার মেম্বার,চেয়ারম্যানসহ থানার অফিসার ইনচার্জ মহোদয়কে অবগত করি।প্রতিমা ভাংচুরের বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস,পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(কচুয়া সার্কেল) আবুল কালাম আজাদ,কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন,কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ,পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অব ব্যুরো(পিবিআই),ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট(সিআইডি) সহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস সাংবাদিকদের বলেন,একটি গোষ্ঠী দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর জন্য এই সমস্ত অপকর্ম করে যাচ্ছে।যারা এই ধরনের অপকর্ম করে তাদের কোন ধর্ম থাকতে পারে না।এই দেশে হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ,খ্রিস্টানসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মিলেমিশে বসবাস করার অধিকার রয়েছে।যারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে এই হীন কাজ করেছে আমরা সেই সমস্ত দুষ্কৃতিকারীদের কঠোর হাতে দমন করবো।
চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন,অপরাধী যেই হোক তাকে আমরা অচিরেই গ্রেফতার করবো।ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কচুয়ায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর যে ষড়যন্ত্র শুরু করতে চেয়েছিল তা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি।খুব শীঘ্রই অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ বলেন,কচুয়া উপজেলা প্রশাসন সব সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।যারা আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে চায় তাদেরকে আমরা ছাড়বো না।
কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন,পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে আমরা দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য সন্দেহ ভাজন কিছু লোকদের জিজ্ঞাসা বাদ করবো।আশাকরি অপরাধীকে সনাক্ত করে অচিরেই গ্রেফতার করবো।
এই দিক দিয়ে বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্য নির্বাহী সদস্য বিকাশ স্বর্ণকার সার্বক্ষণিক বিষয়টির খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ,সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল সাহা,সদর থানার সভাপতি লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর,সহ সভাপতি মুন্না সাহা,কচুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মানিক ভৌমিক ও কচুয়া উপজেলার হিন্দু সংগঠন গীতা স্কুল পরিচালনা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ চাঁদপুর জেলার কোঅর্ডিনেটর সাংবাদিক রাজীব চন্দ্র শীল,পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ফণি ভূষণ মজুমদার,সাধারন সম্পাদক বিকাশ সাহা,হিন্দু বৌদ্ধ খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রাণধন দেব,সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ পোদ্দার,সাচার জগন্নাথধাম সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি বটু কৃষ্ণ বসু,হিন্দুত্ববাদী নেতা নিমাই সরকারসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।