স্টাফ রিপোর্টার ঃ
আড়িয়াল বিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মৎস্য ভান্ডার বলে খ্যাতি থাকলেও বর্ষার মৌসুমে পানির সল্পতার ধরুণ তা ঝুকির মধ্যে পরতে যাচ্ছে। প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবিকার ক্ষেত্রটি অপরিকল্পনা ও অদূরদর্শী সিদান্তের অভাবে প্রকৃতি ধ্বংসের সাথে বিলীন হতে চলেছে উন্মুক্ত বিলের মৎস্য সম্পদ।
দশ বছর পূর্বে যে সব জাতের মৎস্য ছিল তা এখন দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে যে সকল প্রজাতির মাছ গুলো আছে তা গোলা পানির অভাবে ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। অন্য দিকে বিলে নতুন পানি আসার মৌসুমে মা মাছ ও পোনা মাছ নিধন করায় মাছের অস্তীত্ব সংকট তৈরী হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে মাত্র কয়েক বছরে জীবিকার অভাবে বেকারত্ব বরন করতে পারে লক্ষ লক্ষ পরিবার।
গত বছর এমপিসহ জাতীয় ও স্হানীয় অনেক নেতা বিলে পোনা মাছ অবমুক্ত করেন। এভাবে মৎস্য সম্পদ টিকিয়ে রাখা না গেলেও কিছু টা ঘাটতি পূরনে সহযোগিতা করবে।আড়িয়াল বিল কে ঘিরে হাজার হাজার জেলে কৃষক থাকলেও সরকারের নিকট কোন সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় কৃষক সমাজের জন্য দিক নির্দেশনা প্রদান ও আর্থিক সহযোগিতা কার্যক্রম গ্রহন করতে সক্ষম হচ্ছেনা।
বিশেষ করে করোনা মহামারির এ দূর্যোগে আরও ভয়াবহ রুপ নিতে যাচ্ছে। প্রতি বর্ষার মৌসুমে স্হানীয় কৃষকগণ বিল হতে লক্ষ লক্ষ টাকার শাপলা শামুক উত্তোলন করে ঢাকাসহ আশ পাশ এলাকায় সরবরাহ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। শুকনো মৌসুমে গবাদী পশু বিচরণের উত্তম স্হান। ১২ মাস পশু খাদ্যের প্রাকৃতিক যোগান দাতা বিল। কৃষকরা সরকারী সঠিক সুযোগ সুবিধা অর্জন করতে পারলে প্রায় সব প্রকারের সবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হতে পারবেন বলে আশাবাদি বিলবাসী।
বিশেষ করে এ এলাকার হিন্দু ও মুসলিম কৃষক সমাজ ঐতিহ্যগতভাবে তাদের মেধা মনন ও আয়ের উৎস এবং বিপদের বন্ধু হিসেবে আড়িয়াল বিল কে গণ্য করে আসছে। ২০১১ সালে স্হানীয় গনমাধ্যম ও জনতা সরকারে সবচেয়ে বড় প্রকল্প বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ রুখে দেয়।
যদিও সংগঠিত আন্দোলন কেন্দ্র করে পুলিশ হত্যার জগন্য ঘটনা ঘটলে শতশত লোক আসামী হন। সরকার এত বড় প্রকল্প হতে বাস্তবতার নিরীখে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বটে তবে তাদের চিন্তা ফিরিয়ে নেওয়ার কথা নয়। বিলের প্রাকৃতিক সম্পদ সঠিকভাবে আহরন কিভাবে করা যেতে পারে অবশ্যই তা চিন্তা ভাবনা করার সঠি সময় এসেছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ কে পুজি করে একটি সিন্ডিকেট ধারাবাহিকভাবে অসহায় সাধারন কৃষক জেলেদের জিম্মী করে রাখার কৌশল অনেক পুরানো। শুকনা এবং বর্ষায় উভয় মৌসুমেই বিল হতে পারে আর্দশিক পর্যটন কেন্দ্র । আড়িয়াল বিল কে কেন্দ্র করে পাড়া মহল্লায় দোকান পাটসহ ভবিষ্যতে গড়ে উঠতে পারে হোটেল মোটেলসহ নানা ধরণের বানিজ্যিক সুবিধা সম্বলিত স্হাপনা।
বাড়ৈখালী বাজারের উত্তর পাশে সিরাজদিখান শেখরনগরের পাউসার এলাকায় কয়েক টি কফি শপ ব্যপক জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এ রকম দেখা গেছে পদ্মার ওপারে যেখানে কোন মানুষের বসতি না থাকলেও দৃষ্টিনন্দন গৃহ নির্মান করে সামাজিক বিনোদনের আয়োজন করা হয়েছে। অবশ্য ওখানে আপনি রাতে থাকতে পারবেন না, পরিবার পরিজন নিয়ে সময়ের মধ্যেই ফিরতে হবে। এমন স্হাপনা আড়িয়াল বিলের মাঝে মাঝে নির্মীতি হতে পারে কারন বিল টির বুক জুড়ে শত ডাঙ্গা (দিঘী) রয়েছে প্রাকৃতিক মাছে সমৃদ্ধ, যেখানে মৎস্য প্রেমীরা পৌছে টিকেটে মাছ শিকার করতে পারবেন।
এমন বৈচিত্রপূর্ণ পাখির কলতানে মুখরিত আড়িয়াল বিল আগামীর সময়ের জন্য সঠিক পরিকল্পনা গ্রহন করতে ব্যর্থ হলে ভূমি খেকো চক্র ও কথিত রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা হজম করে নিবেন এটা অনুমেয়। ভূমির সঠিক কৃষি ব্যবহার কৃষক বান্দব জনসম্পৃক্ত নীতি বাস্তবায়ন জরুরী। কৃষি কৃষক উন্মুক্ত জলাশয় আড়িয়াল বিলের জমি ও পানির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমেই বিলের উপর নির্ভরশীল ১০ লক্ষ পরিবারের জন্য সঠিক নীতি জরুরী।