দক্ষিণের জেলা খুলনার রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের শিয়ালী গ্রামে চারটি মন্দিরে হামলা এবং স্থানীয় হিন্দু মালিকানাধীন দোকান ভাংচুরের ও লুটপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রূপসা থানার তথ্যানুসারে, শনিবার রাতেই এ নিয়ে একটি মামলা দায়েরের করে এর পর এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলাটিতে ২৫ জনের নাম ঊল্লেখ করে মোট ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে বলে জানান।
এলাকাবাসী জানান, এ নিয়ে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। এই ধরনের ঘটনা যেন পুর্নাবৃত্তি না হয়, সেজন্য পুলিশ ও র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। এদিকে, রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেন দৈনিক বাংলার অধিকার কে জানান- “এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে”।
রূপসার ইউএনও ও থানার ওসি দুজনেই বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় মসজিদে নামাজ চলার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের ‘গান-বাজনা’ করছিলেন। দুই পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয় যেটাকে তারা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে বর্ণনা করছেন বলে ওসি জানান।
আরও অভিযোগ উঠেছে এই ঘটনার জের ধরেই গতকাল সন্ধ্যার পর কতিপয় দূর্বৃত্ত হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামের মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর করে।
এই সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কিছু বাড়িতেও তান্ডব ওহামলা চালায় লুটপাট এর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার (৭ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৬টার দিকে শতাধিক যুবক রামদা, চাপাতি, কুড়াল নিয়ে শিয়ালী গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় শিবপদ ধরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়েছে।
তার বাড়ির গোবিন্দ মন্দিরসহ শিয়ালী পূর্বপাড়া হরি মন্দির, শিয়ালী পূর্বপাড়া দুর্গা মন্দির, শিয়ালী মহাশ্মশান মন্দিরের বেশিরভাগ প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে।
একই সময় কয়েকজন বাধা দিতে গেলে তাদের পিটিয়ে আহত করা হয়।
এলাকাবাসী প্রতিরোধ তৈরি করার আগেই হামলাকারী যুবকরা পালিয়ে যায়।তবে এটি পূর্ব পরিকল্পিত বলে জানান।
গ্রামবাসী ও পূজা পরিষদের নেতারা জানান, শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে পূর্বপাড়া মন্দির থেকে কয়েকজন নারীভক্ত কীর্তন করতে করতে শিয়ালী মহাশ্মশানের দিকে যাচ্ছিলেন। পথের মাঝে একটি মসজিদ ছিল।
মসজিদের ইমাম নারীদের কীর্তন করতে নিষেধ করেন। তখন কিছুটা তর্কাতর্কি হয়। বিষয়টি নিয়ে শনিবার (৭ আগস্ট) থানায় বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
রূপসা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শক্তিপদ বসু দৈনিক বাংলার অধিকার কে জানান হামলার সময় গ্রামবাসী এক হয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে শিয়ালী ক্যাম্পের পুলিশ উল্টো গ্রামবাসীকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে রূপসা উপজেলার নির্বাহী অফিসার জানান, ওই দ্বন্দ্বের সমাধান সেদিনই হয়ে গিয়েছিল এবং ঐদিনের ঘটনার সাথে শনিবারের হামলার সম্পর্ক নেই।
এদিকে নামনাপ্রকাশে অনুছুক তিনি বলেন বিষয় টি যেন ভিন্ন ভিন্ন খাতে নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ইউএনও রুবাইয়া তাছনিম জানান, শুক্রবারের ঘটনার পরপরই প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের নিয়ে স্থানীয় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।