পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ মাহতাব উদ্দিন মনিমিয়াসহ৩০জনকে গণহত্যা করে কপিলমুনি ক্যাম্পের রাজাকাররা । তারা ঐ দিন সকাল থেকে পাইকগাছা বাজারের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে। তাদের এই বিচরণ এলাকার মানুষের মনে নানান রকম সন্দেহের সৃষ্টি করে।
রাজাকাররা ওই রাতেই সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সংগঠক শেখ মাহাতাব উদ্দিন মনি মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান, গাজী শামসুর রহমান, মনোহর, নুনু বৈরাগী সহ কমপক্ষে ৩০ জন মানুষকে গুলি করে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। গদাইপুর ইউনিয়ন এর জনপ্রিয় চেয়ারম্যান শহীদ শেখ মাহাতাব উদ্দিন মনি মিয়ার শরীরে ১১ টি বুলেট পাওয়া যায়।
সেদিনের ঘটনা
শহীদ শেখ মাহতাব উদ্দিন মনি মিয়া ছিলেন পাইকগাছার অভিভাবক, গদাইপুর ইউনিয়ন এর জনপ্রিয় চেয়ারম্যান এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। এ কারণে কপিলমুনি রাজাকাররা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২৮ জুলাই মনি মিয়াকে ধরে আনার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঐদিন সুবেহ সাদেকের সময় মনি মিয়ার ছোট ভাই জামাল উদ্দিন পায়ে হেঁটে এসে কপিলমুনির হাওলি গ্রামে তার ভগ্নিপতি মরহুম শেখ আবু তালেব এর সাথে তার বাড়িতে সাক্ষাৎ করেন এবং ঘটনা তাকে অবহিত করেন। আবু তালেব তাৎক্ষণিক জামাল উদ্দিন কে সাথে নিয়ে কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্পে গিয়ে কমান্ডারের সাথে দেখা করেন,এবং মনি মিয়াকে ছেড়ে দেবার জন্য অনুরোধ করেন। রাজাকার কমান্ডার তাকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন,বলেন কপিলমুনিতে নিয়ে আসার পর আপনাকে ডেকে আনা হবে এবং আপনার হাতেই তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।এদিকে ভোরের আলো ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকাজুড়ে মানুষের মাঝে এক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, ঘটনা আঁচ করতে পেরে রাজাকার কমান্ডার মনি মিয়াকে পথিমধ্যে হত্যার নির্দেশ দেয়। রাজাকাররা সিলেমানপুর এসে মনিমিয়াকে কপোতাক্ষ নদীতে নামিয়ে দিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। বছর ঘুরে ২৮ জুলাই বারবার ফিরে আসে। পাইকগাছার অভিভাবক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ শেখ মাহতাব উদ্দিন মনি মিয়ার নাম আজ আর সেভাবে স্মরণ করা হয় না বটে তবে স্মৃতির পাতায় ময়লা জমলে ও তার অক্ষরগুলো অস্পষ্ট হয়ে যায় না,, পাইকগাছার প্রবীণ মানুষেরা তাই পরম শ্রদ্ধায় আজও স্মরণ করেন শহীদ শেখ মাহতাব উদ্দিন মনি মিয়ার নাম।