দিনাজপুরের বিরামপুর উপজলার বাজার গুলোতে দেখা মিলেছে লাল টসটসে লিচুর। লিচুর রাজ্য হিসেবে খ্যাত উত্তরের বৃহত্তর জেলা দিনাজপুর। দিনাজপুরের লিচু মানেই স্বাদ ও রসে ভরপুর। যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন ব্যস্ত হয়ে উঠছে বিরামপুরের লিচু চাষী, ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতারা।
তবে আবহাওয়া অনূকুলে না থাকায় চলতি মৌসুমে লিচুর আশানুরুপ ফলন হয়নি এই উপজেলায়। ফলে লোকসানের সংশয়ে রয়েছে লিচু চাষীরা। আবার অধিকাংশ লিচু চাষী অধিক লোকসানের হাত থেকে রক্ষায় অপরিপক্ক লিচুতে বিভিন্ন রাসায়নিক স্প্রে করে সবুজ লিচুকে রঙ্গিন লিচুতে রূপান্তরিত করছে। বাজারে এসব রাসায়নিক যুক্ত অপরিপক্ক লিচু বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে ঐতিহ্যবাহী দিনাজপুরের লিচুর স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ক্রেতারা।
লিচু চাষীরা বলছে, গাছে লিচুর ফুল আসার পর থেকে দীর্ঘ সময়ে বৃষ্টির দেখা মেলেনি আকাশে। পাশাপাশি ছিল রোদের প্রখর তাপ। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় আশানুরুপ লিচু ধরেনি গাছে। আবার আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় লিচু পরিপক্ক হবার আগে আগেই ফেটে যাচ্ছে। ফলে ব্যাপক লোকসানের আশংকায় দিন কাটছে তাদের। উপজেলার লিচু বাগান গুলো ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বাগানে চায়না-৩ ও বোম্বাই জাতের লিচুর গাছ রয়েছে। বাগানের বেশ কিছু গাছে লিচুর কোন দেখা মেলেনি চলতি মৌসুমে।
যেসব গাছে লিচু ধরেছে, সেটিও তুলনামূলক কম। এসব বাগান থেকে প্রাকৃতিক ভাবে লাল হয়ে লিচু বাজার জাত করতে সময় লাগবে আরো এক সপ্তাহ। তবে পরিপক্ক হবার আগেই লিচু ফেটে যাওয়ায় গাছে বিভিন্ন রাসায়নিক স্প্রে করছে চাষীরা। এসব রাসায়নিক প্রয়োগের ফলে এক থেকে দুই দিনের ভিতরেই পূর্ণ পরিপক্ক হবার আগেই লিচু লাল রুপ ধারণ করছে। আর অপরিপক্ক ও রাসায়নিক দ্বারা রঙ্গিন হওয়া লিচু গাছ থেকে সংগ্রহ করে বাজারজাত করছে লিচু চাষীরা। ফলে পরিবর্তন হচ্ছে লিচুর স্বাদ। পাশাপাশি পরিবর্তন হচ্ছে লিচুর আকৃতি ও কালার। এসব লিচু বাজার থেকে কিনে নানা ভাবে প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা।
অধিকাংশ বাগানে বোম্বাই এবং দেশী জাতের লিচু প্রাকৃতিক ভাবেই হালকা লাল রুপ ধারণ করেছে। তবে চায়না-৩ ও মাদ্রাজি সহ অন্যান্য বিদেশী জাতের লিচু পরিপক্ক হতে সময় লাগবে আরো ৫ থেকে ৭ দিন। লিচুর বাজার গুলো ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য বছর লিচুর জমজমাট হাট বসলেও, এই বছর লিচুর ফলন কম হওয়ায় জামজমকপূর্ণ কোন হাট নেই। লিচু ব্যবসায়ীরা রাস্তার পাশে ছোট ছোট দোকান দিয়ে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত লিচু বিক্রয় করছে।
এসব দোকানে বোম্বাই জাতের লিচু প্রতি ১০০ পিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা এবং চায়না থ্রি ৬০০ টাকা দরে। অপর দিকে দেশী জাতের প্রতি ১০০ পিচ লিচু বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি