ছোট ভাইকে নিজ হাতে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অপরাধে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে বড় ভাই সোলেমান মিয়া ও ভাবি জোসনা বেগম। ছোট ভাই আক্কাজ হোসেনকে (৪২) হত্যার পর দির্ঘদিন পলাতক ছিলেন বড় ভাই সোলেমান মিয়া ও ভাবি জোসনা বেগম।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ভোরে ময়মনসিংহের ত্রিশালের মাঠের বাড়ি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার সোলেমান মিয়া উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের কিসামত দুহলি গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে এবং ভাবি জোসনা বেগম একই গ্রামের বাসিন্দা।
গত ২৩ মার্চ মঙ্গলবার লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা ইউনিয়নের কিসামত দুহলি গ্রামে ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বড় ভাই সোলেমান মিয়া ও আক্কাজ হোসেনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এতে করে দুজনের মধ্যে উল্টো মান-অভিমান আরও বেড়ে যায়।
অভিযোগে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ দুপুরে জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাকাটির সৃষ্টি হলে এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির শুরু হয়। পরে আসপাশের লোকজন এসে তাদের যে যার ঘরে ঢুকে দিয়ে চলে যান। পরে সন্ধ্যার দিকে বড় ভাই সোলেমান মিয়া হঠাৎ করে একটি ধারালো কুড়াল নিয়ে এসে ছোট ভাই আক্কাজ হোসেনের মাথায় স্বজোড়ে কোপ মারে। এতে ছোট ভাই আক্কাস সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
পরদিন ২৪ মার্চ নিহত আক্কাসের স্ত্রী হাসনা বেগম বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই ঘাতক সোলেমান মিয়া ও স্ত্রী জোসনা বেগমকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালালে তারা দুজনেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
দীর্ঘ একমাস পর শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই জহুরুল ইসলাম ময়মনসিংহের ত্রিশালের মাঠের বাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেন।
ওসি আরজু মো. সাজ্জাত হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, টানা এক মাস তাদের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা হয়েছে। কোথাও তাদের খোঁজ মেলেনি, পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোরে অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালের মাঠের বাড়ি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।