কুড়িগ্রাম শহর সংলগ্ন বেলগাছা ইউনিয়নের খলিলগঞ্জ বাজারের পাশে জয়বাংলা মোড়ে সদ্য প্রসূত নবজাতকসহ এক ভারসাম্যহীন নারীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৭ মার্চ) ভোরে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ মুমূর্ষু মা ও তার পুত্র সন্তানকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। বিকেলে পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা ওই ভবঘুরে নারী ও তার সন্তানের খোঁজখবর নেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসার শরীফুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আহসান হাবীব নীলু, এডিশনার এসপি রুহুল আমিন, এএসপি উৎপল কুমার রায়, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার প্রমুখ।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার জানান, শনিবার ভোর ৪টার দিকে শহরের খলিলগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে সহায়তা চেয়ে ৯৯৯ নম্বরে একটি কল করে স্থানীয়রা। সেখানে সদর থানার এসআই মো. জাহিদ হাসানকে ঘটনাস্থলে পাঠালে মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা ও তার সদ্য প্রসূত সন্তানকে মাটির মধ্যে গড়াগড়ি করা অবস্থায় দেখতে পান। দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে সন্তানসহ কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। মহিলা শুধুমাত্র তার নাম রঞ্জিনা এবং উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়ন নামটি বলতে পারে। এছাড়া সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। দীর্ঘদিন ধরে সে ওই এলাকায় জয়বাংলা মোড়ে রাত্রিযাপন করে আসছিল। ঘটনার পর থেকে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় মা ও সন্তানকে দেকভাল করছে পুলিশ।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, শিশুটির অবস্থা তেমন সন্তোষজনক নয়। তার ওজন এক কেজি ৫ গ্রাম। শিশুটির সেপটিসিনিয়া ডেভলপ করেছে। তবে অক্সিজেন সার্কুলেশন অনেক কম।
কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আহসান হাবীব নীলু জানান, একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ও ভবঘুরে নারীর সাথে জঘন্য অপরাধ করা হয়েছে। বিকৃত রুচির মানুষ ছাড়া এমন কাজ কেউ করতে পারে না। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে।
জেলা সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন অফিসার শরীফুল ইসলাম জানান, নারীটি মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজের ঠিকানা বলতে পারছে না। আমরা ঠিকানা খুঁজে তাকে পরিবারের কাছে দিতে পারি। তা নাহলে তার সন্তানকে আইনগত ব্যবস্থার মাধ্যমে কারো জিম্মায় অথবা সমাজসেবা কর্তৃক সরকারি প্রত্যায়িত প্রতিষ্ঠান ছোট্টমনি নিবাসে দিতে পারি।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, আমরা জরুরি সেবা থেকে কল পেয়ে মা ও নবজাবককে উদ্ধার করি। মায়ের ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য তার ছবি প্রতিটি থানায় দেয়া হয়েছে। এটি একটি অমানবিক বিষয় একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী প্রেগনেন্ট হয়েছে। আমরা তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করছি। সমাজসেবা অফিসের লোকজনকে ডাকা হয়েছে। যাতে আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে কোন সহৃদয় পরিবার অথবা সরকারি হোমে দেয়া যেতে পারে।