গতকাল (২৫ মার্চ) বিকেলে দূতাবাসের হলরুমে এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে এবং দূতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রুহুল আমিনের পরিচালনায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াতের পাশাপাশি শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভা শুরু হয় ।
আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন শ্রম কাউন্সিলর (২) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল।
গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার বলেন,একাত্তরের অগ্নিঝরা এদিনে বাঙালি জাতি তথা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছিল ইতিহাসের বিভীষিকাময় ভয়াল ও নৃশংসতম বর্বরতা।
একাত্তরের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে গণহত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পাকিস্তানি দানবরা মেতে উঠেছিল নির্বিচারে স্বাধীনতাকামী বাঙালি নিধনযজ্ঞে। ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানেই মাত্র এক রাতেই হানাদাররা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল প্রায় লক্ষাধিক ঘুমন্ত বাঙালিকে।
তিনি আরও বলেন, ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত দেশ ও জাতির ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। ‘গণহত্যা দিবস’ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে ৩০ লাখ বাঙালির আত্মত্যাগের মহান স্বীকৃতির পাশাপাশি তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধেও চরম প্রতিবাদের প্রতীক।
হাইকমিশনার বলেন, ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। গণহত্যা দিবসে আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে।
পাশাপাশি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান হাইকমিশনার।
এ আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কমোডোর মোস্তাক আহমেদ, কাউন্সিলর (কন্স্যুলার) মো. মাসুদ হোসাইন,পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার কাউন্সিলর মো. মশিউর রহমান তালুকদার, কাউন্সিলর (বাণিজ্যিক) মো. রাজিবুল আহসান, শ্রম শাখার প্রথম সচিব ফরিদ আহমদ সহ দূতাবাসের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আলোচনা সভা শেষে ৭১-এ বাংলাদেশের প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া বিধি-নিষেধের কারণে অনুষ্ঠানে শুধু দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে দূতাবাসের ফেসবুক পেজে লাইভ প্রচার করে প্রবাসীদের অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।