চাঁদপুরের কচুয়ার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের মেঘদাইর গ্রামের দক্ষিনাংশে পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম সুন্দরী খাল। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘের এই খাল ৫০ বছর থেকে খনন না হওয়ায় এবং দখল সংকুচিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয় । অল্প বৃষ্টিতে নষ্ট হয় ওই ইউনিয়নের দক্ষিন মেঘদাইর,এনায়েতপুর,দোজানা গ্রামের কয়েক শতাধিক কৃষকের ফসলি জমি। তাই মেঘদাইর গন্ধার আন্দি থেকে মুন্সী বাড়ি পর্যন্ত ২ হাজার মিটার ও জসিম মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন ব্রীজ পর্যন্ত ৬শ মিটার খাল খননের দাবি ছিল এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের।
জানা যায়, গত ৫০ বছর বেশি সময় ধরে মেঘদাইর গ্রামের ওই অংশে ফলেনি অনেক কৃষকের ধান ও রবি শস্য। পানির তীব্র সংকট আর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার প্রভাবের কারণে এই জমিতে জমে থাকা পানিই কৃষকের ক্ষেত নষ্ট হবার মূল কারণ। প্রতি বছর তলিয়ে যায় কৃষকের ঘামঝরানো কষ্টের ফসল। এদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হোসেনের সার্বিক সহযোগিতায় খাল খননে এবার বদলে যাচ্ছে শতাধিক কৃষকের ভাগ্য।
পানি নিষ্কাশনের একমাত্র এই খালটি দীর্ঘদিন থেকে খনন না হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যার ফলে অল্প বৃষ্টিতে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও ধানি ফসলি জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হন এই এলাকার স্থানীয় কৃষকেরা।
জমিতে জলাবদ্ধতা কমাতে ও কৃষকের ফসল রক্ষার্থে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) আওতায় ২৬০০ মিটার খাল পুন:খনন কাজ করা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক সফিক মিয়াজী,আলী আক্কাছ,রাসেল,নুরুল ইসলাম,কবির ও জাহাঙ্গীর বলেন, খালের পাশে আমাদের অনেক জমি আছে। প্রতি বছর বোরো মৌসুমে ধান কাটার সময় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। আবার পানি সংকটের কারনে রবি শস্যের আবাদ করতে পারছি না। এতে করে বিভিন্ন ফসলাদি পানির তীব্র সংকটে নষ্ট হচ্ছে। চলিত মৌসুমে খাল পূন:খনন উদ্যোগ গ্রহন করার ফলে আমরা এখন থেকে ইরি,বোরো ও রবিসহ বিভিন্ন শস্য চাষাবাদ করতে পারব।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সোহাগ বলেন, জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ২৬০০ মিটার খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। খালের জমা পানি দিয়ে কৃষকরা রবি শস্যের আবাদ করতে পারবেন। দীর্ঘ অনেক বছরের কৃষকের স্বপ্ন পূরনে আমরা খাল খননে কাজ করছি। এখন থেকে স্থানীয় কৃষকরা খাল থেকে পানি সেচ দিয়ে ফলসালাদি চাষাবাদ করতে পারবে।
কচুয়া উপজেলা বিএডিসি কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, মেঘদাইর গ্রামে খাল খনন করায় জমিগুলো সব মৌসুমে আবাদ উপযোগী হবে। আগে জলাবদ্ধতার কারণে কোনো দিনও জমিতে আমনসহ রবি শস্যের আবাদ হয়নি। খাল খনন হলে সেটাও আর হবে না। এখন থেকে খাল থেকে সেচের মাধ্যমে বিভিন্ন শস্য ফলাতে পারবে কৃষকরা।
ছবি: কচুয়ার মেঘদাইর দক্ষিন অংশে সুন্দরী খাল বয়ে যাওয়া ভরাটকৃত খাল। পাশে খালটি পূন: খননে কাজ শুরু হয়েছে।