নতুন বছরকে সামনে রেখে কোটি টাকার মাদক বিক্রির লক্ষ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন রাজশাহী পর্যটন (বার) মোটেলের ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক। বারএর মধ্যে ও বাইরে থেকে অবৈধভাবে বিক্রি হওয়া দেশি/বিদেশি মদ, হেরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরণের অবৈধ মাদকদ্রব্য নগরীর সর্বত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। মোটরসাইকেলযোগে মাদকসেবীদের হোম ডেলিভারি দিচ্ছেন বার ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক ও তার কর্মচারীরা। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ
জানা যায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারা থমকে গেছে। কিন্তু এমন মহাদুর্যোগেও থেমে নেই মাদক কারবারিচক্রের চোরাকারবার। করোনা মোকাবেলায় পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহিনীর করোনাভাইরাস সুরক্ষা কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় সুযোগ নিয়েছে মাদক কারবারিচক্রগুলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বার থেকে সকল ধরণের অবৈধ মাদকদ্রব্য রাজশাহী মহানগরীসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার বিভিন্ন ছোট বড় ক্লাব ও আড্ডা খানায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে নেশায় জড়িয়ে পড়ছের তরুণরা। করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রদের টার্গেট করে মাদকের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার রাজ্জাকদয়। দীর্ঘদিন থেকে মাদক বেচাকেনা করা হলেও নতুন বছরকে কেন্দ্র করে কোটি টাকা কামানোর লক্ষ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন আব্দুর রাজ্জাকদয়। থার্টি ফাস্টকে সামনে রেখে পর্যাপ্ত মাদক সরবরাহ করতে পুলিশের সঙ্গেও আঁতাত চলছে বলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দেশে লকডাউন উঠে যাওয়ার পর রাজশাহী পর্যটন বারের ভেতরেই অবৈধভাবে বিক্রি হতে থাকে বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য। বারটিতে শুধু দেশীয় মদ বিক্রির লাইসেন্স থাকলেও প্রক্যাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিদেশি মদ। মাদকদ্রব্য আইন অনুযায়ী, ২১ বছর বয়সের নিচের কোনো ব্যক্তি বারে মদ ক্রয় ও সেবন করতে পারবেন না। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে ২১ বছর এমনকি ১৮ বছরেরও কম বয়সী কিশোররা মাদকদ্রব্য ক্রয় করছে এবং নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বারটিতে লাইসেন্স ছাড়াও অনেকে অনায়াসে মাদক ক্রয় ও সেবন করে থাকেন। অতিরিক্ত মদপান করে মাতলামি ও অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। এ ছাড়াও বার সকাল ১০টা থেকে রাত্রি ১১টা পর্যন্ত খোলা রাখার নিয়ম থাকলেও সারারাত ধরে চলে মাদক বেচা কেনা।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক,রাজশাহী জেলা ও দায়রা জর্জ,রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার,রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ রাজশাহীর ভিআইপি শীর্ষ কর্মকর্তাদের বাসভবনের আশপাশ দিয়ে মাদকের অভয়ারন্য গড়ে তুলেছে এই বার ম্যানেজার রাজ্জাকসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা। রাজশাহীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বাসভবনের আশে পাশে পুলিশের তল্লাশি ও নজরদারিতে শিথিলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে এই চতুর মাদকব্যবসায়ী রাজ্জাক। কয়েকবার পত্রিকার পাতায় সংবাদ প্রকাশ হলেও বার ম্যানেজার রাজ্জাকের এখনো মাদকের রমরমা বাণিজ্য অব্যাহত থাকায় চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নগরীর সচেতন মহল।
এ বিষয়ে রাজশাহী পর্যটন মোটেলের বারের ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় শুনে ফোনে নয়! সামনা সামনি কথা বলার জন্য বলে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্ল্যাহ কাজল জানান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় অনেক বড় অপরাধ। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। অভিযোগ পেলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, মাদকের বিরুদ্ধে তাদের জিরো টলারেন্স। কাউকে কোনো ছাড় নয়। অভিযোগ পেলেই তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নেয়া হবে