আকাশ সরকার,রাজশাহী ব্যুরোঃ
রাজশাহীতে ১৭টি সোনার বার ছিনতাইয়ের নাটক শেষ পর্যন্ত পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। পুলিশ ছিনতাইয়ের মহানায়ককেও গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম জিতেন ধর (৪৮)। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জামনগর গ্রামে তার বাড়ি। বাবার নাম দ্বীনেশ ধর।
গত ২১ ডিসেম্বর রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল এলাকায় এই ছিনতাই নাটক সাজানো হয়েছিল। এ নিয়ে স্বর্ণের মালিক দ্বিজেন ধর নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এরপর শুক্রবার বোয়ালিয়া থানা পুলিশ জিতেন ধরকে গ্রেপ্তার করে। পরে শনিবার এ নিয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হয়।
সেখানে আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, গ্রেপ্তার জিতেনের বড় ভাই দ্বিজেন ধর (৫০) ফেনীতে থাকেন। ২১ ডিসেম্বর তিনি ফেনারী দুটি জুয়েলার্স থেকে ১৭টি স্বর্ণের বার নিয়ে আসেন। সেদিন ভোরে তিনি রাজশাহীর পুঠিয়ায় ভাই জিতেনের বাড়ি আসেন। তিনি ভাই জিতেনকে বারগুলো রাখতে দেন। প্রতিটি বারের ওজন ১০ ভরি। মোট ১৭ বারের মূল্য প্রায় এক কোটি ১২ লাখ ৭১ লাখ টাকা। জিতেন একজন ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি। তিনি এই স্বর্ণের বারগুলো আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন। এ জন্য তিনি বারের পরিবর্তে তিনটি সীসার রড কাগজে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে স্বর্ণের বারের ব্যাগে রেখে দেন। আর আসল বারগুলো নিজের বাড়িতেই রেখে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ছিনতাইয়ের নাটকটি সাজিয়েছিলেন জিতেন। তার পরিকল্পনা মোতাবেক মিজানুর রহমান মিজান ও মৃদুল নামে দুই ব্যক্তি পুঠিয়া থেকেই বাসের পেছনে পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। তারা ব্যাগ ছিনতাইয়ের জন্য শহরে অন্য তিনজনকে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রস্তুত রাখেন। জিতেন ও দ্বিজেন বাস থেকে নামলেই সে তথ্য অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেন মিজান ও মৃদুল। এরপরই ব্যাগ কেড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আসল স্বর্ণগুলো জিতেনের বাড়িতেই ছিল। সেখান থেকে একটি বার জিতেন বিক্রি করে দেন। তাকে গ্রেপ্তারের সময় বাড়ি থেকে বাকি ১৬টি বার উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শুধু জিতেনকেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এখন তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।