ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক ও এডিশনাল পিপি বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত জেলা আ’লীগ আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. রুহুল আমিন রেজভীকে বুধবার বিকাল ৫টায় জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত জেলহাজতে প্রেরন করেছে। বুধবার বিকাল সোয়া ৩টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক হযরত আলী তদন্তকালে ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডাবেদন জানিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করেন। অপর দিকে এড. রেজভীর শ্বশুর এড. ফজলুল হক তার জামিনের জন্য আবেদন জমা দিলেও আদালতের বিচারক আগামী ১০ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার শুনানীর তারিখ রেখে তাকে কারাগারে প্রেরন করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত ০৬ ডিসেম্বর আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক এড. আসম মোস্তাফিজুর রহমান মনু বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নামধারী এক ও অজ্ঞাত ৩/৪জনকে আসামী করে মামলা (নং-৭) দায়ের করে। মামলায় সদর উপজেলা মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান ইসরাত জাহান সোনালীকে প্রত্যক্ষদর্শী, জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এড. মীর রফিকুল ইসলাম আজম, এড. আবদুল আলিম, এড. মাহাবুব তালুকদার ও মওদুদ আহম্মেদ সহ কয়েকজনকে স্বাক্ষী করা হয়। পরের দিন ৭ ডিসেম্বর উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক হযরত আলী তদন্তকালে প্রধান সাক্ষী ইসরাত জাহান সোনালীর জবানবন্দী গ্রহন কালে সে আঃলীগ নেতা রেজভীর নাম প্রকাশ করেন।
সূত্র আরো জানায়, তাৎক্ষনিক ভাবে পুলিশ আঃলীগ নেতা রেজভীর খোজে নামলে সে ঢাকায় অবস্থান করছে জানতে পেরে তাকে মোবাইলে ফোন দিয়ে জরুরী ভিত্তিতে ঝালকাঠি থানায় যোগাযোগ করতে বললে পরের দিন ৮ডিসেম্বর সকাল সে থানায় উপস্থিত হয়। সেখান থেকে রেজভীকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাসহ ডিবি পুলিশ মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান সোনালীর দেয়া তথ্য সম্পর্কে ও দায়েরকৃত মামলার বিষয়ে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এসময় তার মোবাইল ফোন ও ফেসবুক আইডি তল্লাশী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় সম্পৃক্ততা পেয়ে রাত সাড়ে ৯টায় থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে দিন ৯ডিসেম্বর বুধবার বিকাল সোয়া ৩টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আঃলীগ নেতা রেজভীকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডাবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করলে বৃহস্পতিবার শুনানীর দিন ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য ঝালকাঠির রাজনৈতিক অভিভাবক, ১৪ দলের পুখপাত্র আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি ও তার পরিবারের সদস্যকে জড়িয়ে অপপ্রচারের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক ও এড. মনু বাদী হয়ে গত ০৬ ডিসেম্বর জেলা ছাত্রলীগ যগ্মসম্পাদক শেখ রাব্বিসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলায় দায়ের করেন। মামলায় দায়েরর পর সেদিনই ছাত্রলীগ নেতা শেখ রাব্বিকে গ্রেপ্তার ও তার মোবাইল, ল্যাপটপসহ সেফবুক আইডি ব্যাপক তল্লাশী করে উক্ত অপপ্রচার সংক্রান্ত কোন তথ্যপ্রমান না পাওয়ায় পুলিশ সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহন শুরু করতেই ঘটনা নাটকীয় রুপ নেয়।
তদন্তকালে আঃলীগ নেতা রেজভী ছাড়ার আরো কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম বেড়িয়ে আসায় শহরের পালবাড়ী এলাকার সুভাষ সিংহ রায় নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। এছাড়াও আরো একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আঃলীগের মনোনয়ন পেতে শেখ রাব্বীকে জড়িয়ে দিলেও ষড়যন্ত্রকারীদের থলের বেড়াল সহসাই জনসমক্ষে বেড়িয়ে আসতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে।