চিরসবুজ আমাদের এ বাংলাদেশ দেশমাতৃকার এই সৌন্দর্যের একটা বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে গ্রাম-বাংলার চিরচেনা শত শত পাখি।
কিন্তু অবাধ বৃক্ষ নিধন, জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ ও শিকারিদের দৌরাত্ম্যে অনেক পাখির অস্তিত্বই আজ বিলুপ্তির পথে। কাঠ শালিক পাখিটির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা আমাদের দেশের বিভিন্ন ধরনের প্রকৃতিক জীবগুলো আর আগের মতো দেখতে পারছি না।
গ্রাম-গঞ্জের অতিচেনা শালিক পাখিদের মধ্যে অন্যতম কাঠ শালিক। লালচে, ধুসর, খয়েরি ও পিঙ্গল রঙয়ের মিশেল এই পাখিটি আমাদের চেনা শালিকের চেয়ে কিছুটা ছোট । এরা ১৯ থেকে ২১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
কাঠ শালিকের বুক, পেট ও লম্বা লেজের পালকের রঙ উজ্জ্বল বাদামী রঙের হয়ে থাকে। এদের উজ্জ্বল বড় বড় চোখ ও পা লালচে বর্ণের হয়। গলায় রয়েছে মালার মতো অতিরিক্ত ধূসর পালক। এরা গাছের কোটরে গর্ত করে বাসা বানায়। বসন্ত থেকে বর্ষাকাল পর্যন্ত এদের প্রজন্ম মৌসুম । এ সময় বাসায় তিন থেকে চারটে লম্বাটে নীলচে রঙের ডিম পাড়ে কাঠ শালিক। এদের খাদ্য তালিকার মধ্যে রয়েছে সব ধরনের পোকামাকড় ও ফল ।
সুন্দর এই পাখিটির সংখ্যা প্রতিনিয়তই কমে যাচ্ছে। আগে এদের সর্বত্র দেখা গেলেও এখন দুর্গম বনাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকা ছাড়া এদের খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। এমনকি দেশের উত্তাঞ্চলের নওগাঁর মফস্বল গ্রামগুলোতেও এদের বিচরণ আর আগের মতো পরিলক্ষিত হয় না।
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই সুন্দর পাখিটি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এজন্য পরিবেশবাদীদের পাশাপাশি দেশের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং হটাতে হবে শিকারিদের।
দেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন আইন করে নিধনযজ্ঞ বন্ধ করা।