আল-আমিন নেত্রকোণা প্রতিনিধি:
নেত্রকোণায় ডাঃ জীবন কৃষ্ণ রায়’র করা সিজারে প্রসূতি রোজিনা আক্তার(২৩) মৃত্যুর পর আইরীন পারভীন ঝর্ণার (৩৫) মৃত্যুতে ফুঁসে উঠে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা মাধ্যমে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেন।
সুরক্ষা সেবা নিশ্চিত সহ হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক্যাল লাইসেন্স ও বিধি বহির্ভূত নানা অনিয়ম অবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দ্বায়ে নেত্রকোণা পৌর শহরের ছোটবাজারস্থ ‘সুনেত্র হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামীয় প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা সহ ৫৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন নেত্রকোণার পক্ষ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নারায়ণ চন্দ্র বর্মণএই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় ডাঃ উত্তম কুমার পাল, জেলার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল হক মানিক সহ পুলিশ সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ আদালতে অংশ নেন।
সরকারি বিধি অনুযায়ী একটি বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল/ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিম্নে ১০টি ব্যাড, একজন সার্বক্ষণিক মেডিক্যাল অফিসার,খণ্ডকালীন চিকিৎসক ছাড়াও সার্বক্ষণিক দুইজন নার্স পরিক্ষা – নিরীক্ষার জন্য একজন দক্ষ ট্যাকনিশিয়ান থাকার বিধান থামলেও “সুনেত্র হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ এ তার কোনটাই না পাওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয় বলে জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নারায়ণ চন্দ্র বর্মণ। এসময় অর্থদন্ড আদায় সহ প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নারায়ণ চন্দ্র বর্মণ আরো জানান, বিধি-মোতাবেক সুরক্ষা সেবা নিশ্চিত নিশ্চিত না করেই নেত্রকোণায় ক্লিনিকে সিজারিয়ান রোগীকে ভূল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার তথ্য পেয়েছি। এখন পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোরশেদা খানম বলেন, শহরের সূনেত্র হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বুধবার (১২ অক্টোবর) ডাক্তার জীবন কৃষ্ণ রায় এর চিকিৎসাকালীন আইরীন পারভীন ঝর্ণা (৩৫) নামে একজন প্রসুতির মারা যাওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত ভোক্তভুগী ও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজী আব্দুর রহমান বলেন, জেলা শহরের ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা সঠিকভাবে না দেয়া, ডাক্তার ও দক্ষ জনবল না থাকা এবং রেজিস্ট্রেশন না থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান শুরু হয়েছে। এবং জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
১২ অক্টোবর সুনেত্র হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাঃ জীবন কৃষ্ণ রায় প্রসূতি ঝর্ণাকে সিজারের সময় ভুলে প্রসব থলি ও জরায়ু কেটে ফেলার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১৩ অক্টোবর ময়মনসিংহে (মমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝর্ণার মৃত্যু হয়।