নারীনির্যাতনকারী যেই হোক, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি: তথ্যমন্ত্রী
তানিয়া সুলতানা হ্যাপি রচিত ‘আমি হবো আগামীদিনের শেখ হাসিনা’ শিশুতোষ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নারীনির্যাতন-ধর্ষণের সাথে যারাই যুক্ত থাকুক, যে পরিচয়ই ব্যবহার করুক না কেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তানিয়া সুলতানা হ্যাপি রচিত ‘আমি হবো আগামীদিনের শেখ হাসিনা’ শিশুতোষ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
এসময় বিএনপির মন্তব্য ‘সরকারের জবাবদিহিতার অভাবে দেশে খুন-ধর্ষণ বাড়ছে’ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী একথা বলেন। তথ্যসচিব কামরুন নাহার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং গ্রন্থরচয়িতা তানিয়া সুলতানা বই পরিচিতি বক্তব্য রাখেন।
ড. হাছান বলেন, এ ধরনের অপকর্মের সাথে যারা যুক্ত, তারা দুষ্কৃতিকারী, তাদের কোনো অন্য পরিচয় থাকতে পারে না। এ ধরনের দুষ্কৃতিকারীদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। ইতিপূর্বে এ ধরনের ঘটনায় অনেক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে। ‘এ ধরনের আগেও ঘটতো, কিন্তু আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এমন ব্যাপকতা না থাকায় অনেক ঘটনাই আড়ালে থেকেছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখন বেশিরভাগ ঘটনা আড়ালে থাকে না, প্রায় সব ঘটনাই প্রকাশ্যে আসে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা নারীনির্যাতন-ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার, এই বিষয়গুলো যারা তুলে ধরছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ। এতে করে সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরণের অপকর্ম যারা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সহজতর হচ্ছে।
‘এ ধরনের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করার কোনো অবকাশ নেই, কিন্তু এগুলোকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার জন্য মাঝেমধ্যেই বিএনপির পক্ষ থেকে অপচেষ্টা চালানো হয়’ জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই বিএনপিই দলীয়ভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশে নারী ধর্ষণ করেছে। ২০০১ সালের পর ৮ বছরের শিশুকে, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে এমনকি নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে পুরো গ্রাম অবরুদ্ধ করে সেখানকার নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো অনেকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। সুতরাং যারা দলীয়ভাবে এ ধরনের অপকর্ম করেছে এবং এর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই, তাদের এ নিয়ে কথা বলার কতটুকু নৈতিক অধিকার আছে, সেটিই বড় প্রশ্ন।’
মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। অথচ তারা সকালে একবার, দুপুরে একবার, আবার বিকেলে আরো একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। মির্জা ফখরুল সাহেব বললে তার সাথে প্রতিযোগিতা দিয়ে রিজভী সাহেব বা আরো দু-একজন নেতা সকাল-বিকাল-দুপর বিষোদগার করে আর বলে, আমাদের কথা বলার অধিকার নেই, যা হাস্যকর।’
এসময় ‘আমি হবো আগামীদিনের শেখ হাসিনা’ শিশুতোষ গ্রন্থরচয়িতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শিশুরাই আমাদের জাতির ভবিষ্যত এবং আজকের এই দিনে যেদিন প্রধানমন্ত্রী শিশু দিবসের উদ্বোধন করেছেন, সেদিন এ গ্রন্থের যাত্রা শুরুটি তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি, মানুষের আত্মিক উন্নয়নসমৃদ্ধ একটি উন্নত জাতি গঠন। সেজন্য মানুষের মধ্যে মমত্ববোধ, দেশাত্মবোধ, মূল্যবোধ এগুলোর সমন্বয় ঘটাতে হয় এবং সেটি শিশু বয়সেই করতে হয়। আর সেজন্য এসকল গুণে গুণান্বিতদের জীবন কাহিনী যদি শিশুরা পড়তে পারে, জানতে পারে তাহলে উন্নত জীবন গঠনে সেটি অত্যন্ত সহায়ক হয়। আর তেমনি একজন মানুষ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা, যিনি শৈশব থেকে সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে তার জীবনকে আজকে বিশ্বনেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।’
তথ্যসচিব কামরুন নাহার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও নারী ক্ষমতায়নে পৃথিবীর সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তার জীবন ও কর্ম আমাদের শিশু-কিশোরসহ সকলের জন্য অনুসরণীয়।’
সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সোহানা জেসমিন, লেখক জাহাঙ্গীর আলম শোভন, সংস্কৃতিকর্মী দিপু সিদ্দিকী, নাদিবা পারভীন লাকী, নাজনীন সুলতানা নাজু, আজিমুন রুমা, নাহিদ নাজ, জামান নূর ও শিশুশিল্পী হামীম, ওমর, অনিরুদ্ধ, সাদিয়া, সারামনি, রাইফ, জুঁই, চামেলি, রামিয়া, রামিম, আবরার, সাবীত, হাসিব প্রমুখ বইমোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।