আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যারা মিলিটারি ডিক্টেটরদের হাতে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক কর্মী বা যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, যুদ্ধাপরাধের মদদ দিয়েছে তারা যেন আমাদের দলে না আসে। তারা দলের ক্ষতি করে এবং অঘটন তারাই ঘটায়। তিনি বলেন, দলের যখন কোন্দল শুরু হয় তখন দেখা যায় যে, যারা উড়ে এসে জুড়ে বসেছে তারাই এই কোন্দলের জন্য দায়ী।
রোববার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সকল শহীদের স্মরণে ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সভায় অংশ নেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে এদিক ওদিক থেকে কিছু লোক দলে জোটে। অঘটনের বোঝাটা দলকে বয়ে বেড়াতে হয়। তারা ভালো ব্যবহার করে এমনভাবে চলে আসে যে, আমাদের কেউ কেউ তার দল ভারী করার জন্য তাকে কাছে টেনে নেয়। কিন্তু তাদেরকে নেয়া দলের জন্য সবচাইতে বেশি ক্ষতিকারক। আমাদের প্রতি জনগণের সমর্থন আছে, আমাদের জনগণ আছে আমাদের সংগঠন আছে। বাংলাদেশে একমাত্র সংগঠন আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত, আমাদের সংগঠন সুসজ্জিত । আমাদের নেতার আদর্শভিত্তিক সংগঠন আমাদেরকে গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশ আজ উন্নত হচ্ছে। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম কিন্তু করোনার কারণে বিস্তারিতভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারি নাই।’
এই করোনার মধ্যেও আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিলাম ৮ দশমিক ২ ভাগ। আমরা সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করেছিলাম। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া, মানুষের সকল চাহিদা পূরণে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। দরিদ্র মানুষকে আমরা বিনা পয়সায় খাদ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি। ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ যাতে ভাতা পায়, জমি পায়, বয়স্ক ভাতা বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা ব্যবস্থা আমরা করেছি। আমরা ঘোষণা দিয়েছি, মুজিববর্ষে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। আমরা যখন সমস্ত কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তখন আসলো করোনাভাইরাস। ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে গেছে। এটা শুধু আমাদের দেশে নয়, সারাবিশ্বে একই অবস্থা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যাতে সচল থাকে সেজন্য আমরা শিল্পের প্রসারে বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করেছি এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। কৃষককে ভর্তুকি দেয়া, সারের ভর্তুকি দেয়াসহ বিভিন্নভাবে কৃষকের সহযোগিতা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে অনেক দেশে যে রকম হাহাকার চলছে, আমাদের দেশে কিন্তু সে অবস্থা নেই। প্রত্যেকটা হাসপাতালেই আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের পুলিশ বাহিনী, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, আনসার, বিজিবি ও নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের সেবা করা-এটাই তো জাতির পিতার শিক্ষা। এটাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ।