ফরিদ মিয়া নান্দাইল ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার বাসিন্দা মোঃহারুন আর রশিদ।
জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় কাজ করতে পারেন না তেমন। জন্মের পর থেকেই তার বাম হাতটি অচল। গরিব পরিবারে জন্মগ্রহন করায় হারুন অর রশিদের চিকিৎসাও কপালে জোটেনি। এর পরেও থেমে নেই তার জীবন সংগ্রাম।
বলছিলাম ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাও ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মৃত মোতালেব এর ছোট পুত্র হারুন অর রশিদের কথা। জীবন সংগ্রামে যিনি অপরাজিত সৈনিক। তিনি প্রতিবন্ধী থাকা সত্বেও নিজের ইনকামেই চলছিল সংসার। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে তিনি কাজ করে কোন রকমে চলতো সংসার। স্বামীর পাশাপাশি হারুন অর রশিদের স্ত্রীও বাসায় বাসায় কাজ করে অল্প আয় করতো। কিন্তু দুজনের সল্প আয়ে বাসা ভাড়া ও সংসার খরচে অশশিষ্ট থাকতো না কিছুই।
সংসার জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের পিতা। টাকার অভাবে মেয়ে রিমা আক্তারকে পড়ালেখা করাতে পারেননি। একমাত্র ছেলে ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র জুনাঈদ ইসলামও ঝড়ে পড়ছে স্কুল থেকে।
কিন্তু করোনার কারনে বর্তমানে হারুন অর রশিদ পরিবার নিয়ে গত চার মাস যাবৎ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। বাবার পৈতৃক সম্পত্তি বলতে ৩ শতক জমি থাকলেও নেই কোন নিজস্ব ঘর। পরিবার নিয়ে থাকতে হচ্ছে গাদাগাদী করে তার অপন বড় ভাই সুনু মিয়ার ঘরে। হত দরিদ্র হারুন অর রশিদ দিন পার করছে খেয়ে না খেয়ে। তবুও এখনো জোটেনি তার কপালে সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা।
জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ ভারাক্রান্ত মনে বলেন, আমার একটা হাত অচল, কাজ করতে পারনিনা। তবুও কষ্ট করে দিন পার করছি। এরপরেও আমাকে কোন ধরনের সরকারী সুযোগ সুবিধা দেয়নি স্থানীয় ভাবে৷ আমি চেয়ারম্যানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও কোন সুবিধা করে দেননি।এমনকি ১০টাকা কেজি চালের একটা কার্ডও নেই।আমার কোন ঘর নাই থাকার, ভাইয়ের ঘরে থাকতেছি, বর্তমানে আমি যে অবস্থায় আছি তাতে ঘর বাধার মত কোন পরিস্থিতি নেই।
স্থানীয় কয়েক জনের সাথে বলেও হারুন অর রশিদের অসহায়ত্বের প্রমান পাওয়া যায়।
এবিষয়ে মন্তব্য জানতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান একেএম মোফাজ্জল হোসেন কাইয়ুম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হারুন অর রশিদের প্রতিবন্ধীর মেডিক্যাল সার্টিফিকেট আমাকে দিলে আমি দুই দিনের ভিতরেই তার প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিবো। ঘরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘরের বিষয়টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদারকি করছেন। তার পরেও দেখছি কি করা যায়।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ এরশাদ উদ্দিনকে অবহিত করলে তিনি বলেন প্রশাসনিক ভাবে তার প্রতিবন্ধী কার্ড ও ঘরের ব্যাববস্থা করে দেওয়া হবে।৷