সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
ট্র্যাব সম্মাননা পেলেন অপর্ণা রানী রাজবংশী ফেন্সি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টসের নতুন আউটলেট উদ্বোধন নবীনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ চার ডাকাত আটক সিরাজদিখানে বিক্রমপুর নামকরণে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় আমিরাতে বোয়ালখালী চরণদ্বীপ পাঠানপাড়া প্রবাসীদের জনকল্যাণমূলক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ । ষোলঘরে  জাতীয়তাবাদী যুবদলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত  শ্রীনগরে তন্তরে ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ-চায়না ক্লাব রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

ইতিহাসের পাতা থেকে আজ বঙ্গবন্ধু-দৈনিক বাংলার অধিকার

অধিকার ডেক্স / ২৯৪ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০, ৫:১০ অপরাহ্ণ

ইমাম হোসেন

সৌদি আরব যেদিন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়, সেদিন বঙ্গবন্ধুর জানাযা পড়া হচ্ছে এদেশে। ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫।

৭১ এ আমরা স্বাধীন হলেও ওদের অপেক্ষা করতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু পর্যন্ত।

থাক সেসব কথা। যেটা বলতে চাচ্ছিলাম তা হলো, ৭১-৭৫ এই দীর্ঘ সময়টুকু সৌদির জন্য বাংলাদেশ নামক কোনো দেশের অস্তিত্ব না থাকায় বাংলাদেশীরা হজ্ব করতে যেতে পারছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে ৭৩ এর দিকে ইন্দিরা গান্ধি একটি অর্ডিনেন্স পাশ করেন, যেখানে বলা হয় বাংলাদেশীরা ভারত থেকে হজ্ব যাত্রা করতে পারবে।কিছু মানুষ এভাবে হজ্ব পালন করেছেন বলে জানা যায়। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকতা প্রদর্শন ছাড়াও অন্যান্য জটিলতায়

এই ব্যাবস্থা বেশ টেকসই হয়ে ওঠেনি। বঙ্গবন্ধু সরকার উদ্বিগ্ন হয়ে পরেন। অনেক কুটনৈতিক আলোচনা করেও সৌদি সরকারের নাগাল পাওয়া যাচ্ছিলো না। এমতাবস্থায় ৭৩ এর ৫ সেপ্টেম্বর আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে চতুর্থ ন্যাম সম্মেলনে যোগ দেন বঙ্গবন্ধু। বৈঠক চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সৌদির বাদশাহ ফয়সালের সাথে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।।
বাদশা ফয়সাল এলেন। দুই নেতা পাশাপাশি সোফায় বসলেন। বাদশা ফয়সালের দোভাষী বসলেন মাঝখানে। পারস্পরিক স্বাস্থ্য ও কুশল বিনিময়ের পর কথপোকথন শুরু হলো। কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরলাম-

বাদশা ফয়সালঃ আমি শুনেছি যে, বাংলাদেশে আমাদের কাছে কিছু সাহায্য আশা করছে। আপনি আসলে কি ধরনের সাহায্য চাচ্ছেন। আর হ্যাঁ, যে কোন ধরনের সাহায্য দেওয়ার আগে আমাদের কিছু পূর্বশর্ত আছে।

মুজিবঃ ইউর এক্সেলেন্সী। আশা করি আমার দুর্বিনীত ব্যবহার ক্ষমা করবেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আমার মনে হয় না বাংলাদেশ ভিক্ষার জন্য আপনার কাছে হাত বাড়িয়েছে।

ফয়সালঃ তাহলে আপনি সৌদি আরবের কাছে কি আশা করছেন?

মুজিবঃ বাংলাদেশের পরহেজগার মুসলমানরা পবিত্র কাবায় গিয়ে ইবাদত পালনের অধিকার দাবী করছে। যদি ইবাদত পালনের জন্য আপনার কোন পূর্বশর্ত থেকে থাকে তাহলে আপনি তা বলতে পারেন। আপনি পবিত্র কাবা শরীফের তত্ববধায়ক। বাঙালী মুসলানদের কাছে আপনার স্থান অনেক উচুতে। একথা নিশ্চয় স্বীকার করবেন, সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদেরই সেখানে ইবাদত করার অধিকার রয়েছে। সেখানে ইবাদত পালন করার কোন প্রকার শর্ত আরোপ করা কি ন্যায়সঙ্গত? আমরা সমঅধিকারের ভিত্তিতে আপনার সাথে ভ্রাতৃত্বপূর্ন সম্পর্ক চাই।

ফয়সালঃ কিন্তু এটা তো কোন রাজনৈতিক আলোচনা হলো না। দয়া করে আমাকে বলুন আপনি সৌদি আরবের কাছে আসলেই কি আশা করছেন?

মুজিবঃ ইউর এক্সেলেন্সী। আপনি জানেন যে, ইন্দোনেশিয়ার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। আমি জানতে চাই, কেন সৌদী আরব স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে আজ পর্যন্ত স্বীকৃতি দেয়নি?

ফয়সালঃ আমি অসীম ক্ষমতাবান আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে জবাবদিহিতা করি না। তবু আপনাকে বলছি, সৌদি আরবের স্বীকৃতি পেতে হলে বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে “Islamic Republic of Bangladesh” করতে হবে।

মুজিবঃ এই শর্ত বাংলাদেশে প্রযোজ্য হবে না। বাংলাদেশের জনগনের অধিকাংশ মুসলিম হলেও, আমার প্রায় এক কোটি অমুসলিমও রয়েছে। সবাই একসাথে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে, ভোগান্তিতে পড়েছে। আর সর্বশক্তিমান আল্লাহ শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্যই নন। তিনি বিশ্বভ্রমান্ডের স্রষ্টা।

ইউর এক্সেলেন্সী, ক্ষমা করবেন, তাছাড়া আপনার দেশের নামও তো “Islamic Republic of Saudi Arabia” নয়। বাদশা ইবনে সৌদের নামে নাম রাখা হয়েছে “Kingdom of Saudi Arabia”। আমরা কেউই এই নামে আপত্তি করিনি।

এ সময় অনাকাঙ্খিতভাবে শেষ হয় আলোচনা। উঠে পড়েন বাদশা ফয়সাল। দু নেতা বেরিয়ে যেতে থাকেন।
যাওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেন সেই আয়াত, “লা-কুম দ্বীন-কুম ওয়াল-ইয়া দ্বীন”।

সেই কালো ফ্রেমের চশমা পড়া হিমালয় কে চিনে নিও প্রজন্ম। তোমাকে লীগ করতে হবে না, দল করতে হবেনা, তোমাকে ৭১ করতে হবে। তোমাকে মুজিবে এসে থামতে হবে।

বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ ♥
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!