বিশেষ প্রতিনিধিঃ পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের কালজয়ী কবিতা আসমানিকে গিরে সে সময় কত খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে তার কোন হিসাব জানানেই। কবি জসিম উদ্দিন মুলতঃ আসমানির জীবনচিত্রটির মাধ্যমে সমাজের বাস্তবতার প্রতি ইঙ্গিত করছেন। ভেন্না পাতার ছানির নীচে কঙ্কালসার আসমানিকে দেখতে ২০০৩ সালে সমাজ নির্মাতা সহ অনেকেই গিয়েছিলেন ফরিদপুর জেলার রসুলপুর গ্রামে। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পল্লী কবির আবিষ্কার আসমানিকে এনজিও সংস্থা প্রশিকা একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়। জীর্ণশীর্ণ বসতবাড়ি, টিনের ছিদ্রপথে রোদ্রের লুকোচুরি কিংবা বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাওয়া স্যাঁতসেঁতে ঘরে শতক তালির ছেঁড়াকাপড় পড়া আসমানির জীবন সবাইকে ভাবনায় ফেলে দেয়। ২০১২ সালে আসমানি অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকায় জীবনের শেষ চিকিৎসা প্রদান করা হয়। প্রকৃতির নিয়মে আসমানি চলে গেলেও হয়তোবা পল্লী কবি বেঁচে থাকলে দেশের জীর্ণ কুঠিরে বসবাস করা অসংখ্য আসমানিকে নিয়ে জীবন কথা তাঁর কবিতায় ফুটিয়েছে। বর্তমান সরকার’র গৃহীত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আলোকে কতজন, কতভাবে তদবির করে একটি নিরাপদ বাসস্থান’র ব্যবস্থা করেছে। এনিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও কম হয়নি। বারবার গৃহহীনদের ঘর নির্মাণের তালিকা হয়। কিন্তুু ফেনী জেলা ফুলগাজী উপজেলার দক্ষিণ শ্রীচন্দ্রপুর’র আবুল বশরের বাড়ীতে স্বামী মৃত নুরেরজমার স্ত্রী বিবি ফাতেমা (৬৮) নামে এক বৃদ্ধা গৃহহারা অসহায় হয়ে বিবাহিতা ৪ কন্যার মধ্যে স্বামী পরিত্যক্তা এক কন্যা ও প্রতিবন্ধী নাতি-নাতনীদের নিয়ে অন্যের ঘরে দিনাতিপাত করলেও তার ভাগ্য সিঁকে উঠে! বৃদ্ধার একখন্ড জমিতে ১০ বৎসর পূর্বে কুঁড়েঘরটি সর্বনাশা ঝড় এসে তাও কেড়ে নেয়।
কত চেনাজানা, শিল্পপতি, সমাজ নির্মাতা, জনপ্রতিনিধি তার আঙ্গিনায় দিয়ে উন্নয়নের গল্প বুনে যায়, কিন্তু অসহায় বৃদ্ধ মায়ের কোন কূল-কিনারা হয়না। ষড়ঋতুর একটি পেরিয়ে মুহুরি নদীর কোল ঘেঁষে বর্ষের মধ্যে বৃদ্ধ মায়ের জীবনের গোধূলি লগ্নে উঠানে বসে চক্ষুযুগল মুছে আর ভাবে এই একখন্ড জমিতে ভেন্না পাতার ছাউনি হলেও একটি নিরাপদ আশ্রয় হবে! গৃহহারা অসহায় মানুষের জন্য একটি সুব্যবস্থা প্রয়োজনে আমৃত্যু এমন চিন্তাশীল গণমুখী রাজনীতি করে গেছেন বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পিতার মতো গরীব দুঃখী মানুষের কল্যাণে ছুটে চলেছেন পথে প্রান্তরে। কন্যাদায় হলেও অসহায় বৃদ্ধা মায়ের এমন আকুতিতে বাঙালীর স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু’র কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে সকলেরই প্রত্যাশা।