মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
দেশ স্বাধীনের ৪৯ বছরেও ভাষা সৈনিকের সম্মান পাননি ঠাকুরগাওয়ের সামশুল হক।
সামশুল হক ১৯৩৩ সালের ২১ ডিসেম্বরে ঠাকুরগাও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার বেলশাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ১৯৫২ সালে প্রবেশিকা( matriculation) পাশ করেন।পরে তিনি ১৯৫৪ সালে দিনাজপুর এসএন কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র থাকা কালীন সময়ে তিনি ৫৪’র যুক্তফন্ট্র নির্বাচলে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।
ঠাকুরগাওয়ের সামশুল হক ভাষা আন্দোলন চলা কালে ঠাকুরগাও হাই স্কুলের(বর্তমানে ঠাকুরগাও সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়) প্রবেশিকা পরীক্ষার্থী ছিলেন।তৎকালীন পাকিস্তানের গোটা পূর্ব বঙ্গের ন্যায় ঠাকুরগাওতেও ভাষা আন্দোলনের প্রভাব পরে।শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।বাংলা ভাষা রক্ষায় চলে হরতাল, মিটিং, মিছিল,পথ সভা,কালো পতাকা প্রদর্শনসহ আরো কত কি।
বাংলা ভাষা রক্ষায় এ সব কর্মসূচিতে স্ব শরীরে অংশ নেন তৎকালীন ম্যট্রিকুলেশনের ছাত্র সামশুল হক। এ অান্দোলনে তৎকালীন পুলিশের হাতে আরো কয়েকজন ছাত্রসহ আটক হোন তিনি। আটকের পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পিতা তৎকালীন ওই স্কুলের প্রভাবশালী শিক্ষক মির্জা রুহুল আমিনের কৌশলগত কারণে ও শক্ত হস্তের দরুন মুক্তি পান সামশুল হক বলে জানা গেছে।
ভাষা আন্দোলনে তাঁর কৃতিত্বের কথা বেশ কিছু গ্রন্থে উঠে আসলেও তিনি এখনও ভাষা সৈনিকের মর্যাদা পাননি।
তাঁর মৃত্যু হয় ২০০৪ সালের ৩১ মে। তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে মেয়েদের সরকার তথা রাষ্ট্রের প্রতি দাবি তাঁকে যেন ভাষা সৈনিকের সম্মান দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে তাঁর ছেলে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা শাখার সভাপতি মোমিনুল হক ভাষানী বলেন, আমার মরহুম পিতার বর্ণাঢ্য জীবনের মধ্যে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহন অন্যতম। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় ভাষা সৈনিকের সম্মান পাননি।তিনি আমৃত্যু আওয়ামী লীগের রাজনীতির সংগে জড়িত ছিলেন।৫২ সালে বাংলা ভাষা রক্ষায় আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। তিনি ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং ১৯৭২ থেকে মৃত্যুর দিন (২০০৪ খ্রি.)পর্যন্ত বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি ১৯৭০ সাল হতে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত মুজিব আদর্শে সর্বদা মুজিব কোর্ট গায়ে ব্যবহার করেছেন।এছাড়াও ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে বাকশালের থানা গভর্নর হিসাবে তাঁর নাম প্রস্তাবিত হয়।তাই মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর প্রতি আমাদের পারিবারিক দাবি আমার বাবা সামশুল হককে ভাষা সৈনিক মর্যাদায় সম্মানীত করা হলে আমরা চিরকৃতজ্ঞ হবো।