যীশু সেন (চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ): লেখক এড.শুভাশীষ শর্মা-মানবতা মানুষিক গুনের বাহুল্যতা নয় বরং সহজাত প্রবৃত্তি। কারন মানবতা আছে বলেই আমরা মানব বা মানুষ। পক্ষান্তরে মানবতাহীন মানুষকে মানব হিসাবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। মানুষের মাঝে মানবতার উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে মানবকে “মানুষ”এবং “লোক” এই দু’ভাগে ভাগ করা যায়। তাই প্রগতিশীল জ্ঞানীরা বর্তমান সমাজের মানবতামূলক কর্মকান্ডের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে মানবতা বিষয়ক আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, “বর্তমান প্রেক্ষাপটে পৃথিবীতে লোকসংখ্যা বাড়লেও মানুষের সংখ্যা বাড়েনি।” মানুষ তার সহজাত প্রবৃত্তি থেকে বিচ্যুত হয়ে স্ব স্ব ধর্মশাস্ত্রে মানুষের জন্য অননুমোদিত কর্মকান্ডে অতিমাত্রায় নিযুক্ত হওয়ায় আজ প্রকৃতিও মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। মানুষ সৃষ্ট অপকর্মের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে প্রকৃতি তার নিজস্ব নিয়মে এমন এন্টিবডি প্রস্তুত করেছে, যার আক্রমণে মানুষ আজ গৃহবন্দী। প্রকৃতির এমন প্রতিশোধ পরায়নতার লংঘনের চেষ্টাই মানুষের মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের চারপাশের মানুষের অমানবিকতার বিষবাষ্পপূর্ণ তৃষিত মরুর মাঝে এক ফোঁটা জল দিয়ে যে কতিপয় মহাত্মা শুষ্ক মরুভূমিতে প্রানের সঞ্চার করেছেন তাঁদের মধ্যে এড. তপন কান্তি দাশ অন্যতম। সীমিত সামার্থ্যের মধ্যেই মানবতার অসীম দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ব্যক্তিত্ব আমাদের এড. তপন কান্তি দাশ’র মানবতার সাধনা ভোগবিলাসী তথাকথিত অভিজাত সমাজের মানুষের জন্য এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এড. তপন কান্তি দাশ বলেন, “প্রকৃত মনুষ্যত্বের সুখ মানবতার নিষ্পেষনে নয় বরং মানবতার উৎকর্ষ সাধনে। তাই মানুষের চিরাচরিত জন্মগত মানবিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে মনে প্রাণে ধারন করার নামই মনুষ্যত্ব। মানবিকতা এমনি একটি দিক, যা মানুষকে মানুষ হিসাবে পরিচিত করে”। তাই তিনি সবাইকে মানবিক হৃদয়ের মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে বলেছেন। সারা বিশ্বব্যাপী আজকে প্রকৃতির এমন প্রতিশোধ পরায়নতার জন্য মহাপরাক্রমশালী দেশগুলো যখন ধরাশায়ী, ভবিষ্যতে নিজেদের অস্তিত্বের সংকটে দিশেহারা, সেখানে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের নিম্নআয়ের মানুষগুলোর পক্ষে বেচেঁ থাকার স্বপ্ন দেখাটায় যেন বিরাট ভূল। নিজের শারীরিক শ্রমের উপর যার আগামীকালের দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের নিশ্চয়তা, সে মানুষটি আজ কর্মহীন, উপায়হীন হয়ে দেওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে সোনালী ভোরের প্রত্যাশায় প্রানান্তকর দিন যাপন করছে। কিন্তু পেটের ক্ষুধা আর পরিবারের অবুঝ শিশুসন্তান, বৃদ্ধ পিতা-মাতা বা স্বধর্মপত্নীর আর্তনাদ আর হাহাকার কি পারবে তাকে সেই অনাগত ভোরটি দেখার সময় পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখতে!! প্রকৃতির এ অনাঙ্ক্ষিত হিংস্ররুপের সাথে পাল্লা দিয়ে অভিজাত সমাজ তার অর্থের অতিশায্যে সমস্ত প্রতিরোধের প্রয়োজনীয় আড়ম্বর করে রাখলেও দৈনিক ভিত্তিতে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর সেই প্রস্তুতি নেই। বাংলাদেশ গীতা শিক্ষা কমিটি (বাগীশিক) মানব সমাজের জন্য প্রেরিত পরম-পুরুষের দিব্য সংবিধান শ্রীমদভগবদ্গীতার শাশ্বত বাণী প্রচারের মাধ্যমে সনাতনী সমাজের ধর্মীয় উৎকর্ষ সাধনের নিমিত্তে কাজ করলেও পুরুষোত্তমের ঘোষিত মানবতার অমৃতবাণীতে উজ্জীবিত হয়ে “মানব কল্যাণে বাগীশিক” নামে প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে। এ প্রকল্পের রুপকার, স্বপ্নদ্রষ্টা এবং প্রাণসঞ্জীবক বাগীশিকের সর্বস্তরের সংসদের মাথার মুকুট এড. তপন কান্তি দাশ গীতাশিক্ষার প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি মানবিক ও সামাজিক কর্মকান্ডকে সংগঠনের গঠনতন্ত্রে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হিসাবে অন্তর্ভূক্ত করেছেন। ফলে ধর্মের বানী প্রচারের সংগঠন বাগীশিক কালক্রমে একটি মানবিক ও সামাজিক সংগঠনে রুপায়িত হয়েছে। বাগীশিকের জন্মলগ্ন থেকে বাগীশিক গৃহীত ও বাগীশিক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেশপ্রিয় চৌধুরী বিনয় ও সাধারণ সম্পাদক ডাঃঅন্জন কুমার দাশ’র নেতৃত্বেে চলমান মানবিক ও সামাজিক প্রকল্প যেমন ফুডব্যাংক, কন্যায়দায়গ্রস্থ পিতাদের নগদ সহয়তা, পঙ্গুদের হুইলচেয়ার বিতরন, অন্ধ ও প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রান বিতরন, বৃক্ষরোপণ প্রকল্প, সন্তানহীন বয়োবৃদ্ধের এককালীন আর্থিক সহায়তা, পবিত্র পূজাঙ্গন ও বিসর্জনস্থল নিশ্চিত করা, মন্দিরভিত্তিক বিবাহ প্রকল্প, জরাজীর্ণ ঐতিহ্যবাহী মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও পুনঃস্থাপন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশে গীতাশিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠাসহ সর্বোপরি অনাথ ও দুঃস্থদের অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের মতো প্রতিটি প্রকল্পের উদ্গাতা এবং অগ্রনায়ক এড. তপন কান্তি দাশ। শৈশব থেকে জীবনের প্রতিটা মুহুর্তে অসীম সংঘর্ষের মাঝে শূন্য জীবনে পূর্ণতা প্রাপ্তি শেষে অত্যন্ত বার্ধক্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর ক্লান্ত দেহে রাজসেবা গ্রহণের মধ্যদিয়ে পুষ্পশয্যায় শায়িত থেকে জীবন অতিবাহিত করার সুযোগ থাকলেও দেশের বর্তমান বিরাজমান পরিস্থিতিতে গীতাধ্যায়ী এ মহান ব্যক্তিত্ব নিজের সমস্ত সুখ-বিলাসকে তুচ্ছজ্ঞান করে বাগীশিকের ব্যানারে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে “নগদঅর্থ ও বেঁচে থাকার সামগ্রী” গীতাময় উপহার হিসাবে বাগীশিকের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে অসহায় অনাহারক্লিষ্ট মানুষের হাতে তুলে দিয়ে আত্মিক সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টায় নিজেকে সমর্পিত করেছেন। পিতার এ সু-মহান কর্মযজ্ঞে পিছিয়ে নেই তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরী জৈষ্ঠ্য পুত্র মানবতার আরেক ফেরিওয়ালা বিশিষ্ট চক্ষুবিশেষজ্ঞ ডা.কথক দাশ। নিজের সমস্ত প্রাপ্তিগুলোকে অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার মাঝেই যেন তাঁর এক স্বর্গীয় আনন্দানুভূতি।
দিনের বেলা সারা পৃথিবীকে আলোকিত করতে আকাশে যেমন একটি সূর্য এবং রাতের বেলা একটি চন্দ্র দরকার একইভাবে প্রতিটি সমাজকে আলোকিত করার জন্য প্রতিটি সমাজে এরকম একজন এড.তপন কান্তি দাশের জন্ম হওয়া বাঞ্ছনীয়। আর্থিক সহায়তা আর বেঁচে থাকার সম্বল গীতাময় উপহার হিসাবে অসহায় মানুষের মাঝে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর এ মহৎ কর্মযজ্ঞের শেষ নয়, প্রতিটি দিন এবং প্রতিটি মুহূর্ত ভেবেছেন কিভাবে বর্তমান অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষগুলোর বেঁচে থাকার স্বপ্নকে পূর্ণতা দেওয়া যায়!! নিজের হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন তাঁদের প্রতিটা কষ্টের মুহূর্ত। যা তাঁর এই ধর্মযুদ্ধের নিরন্তর সহযোদ্ধা বাগীশিকের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেশপ্রিয় চৌধুরী বিনয় এবং সাধারণ সম্পাদক ডা.অঞ্জন কুমার দাশ’র মুখে এ বিষয়ে এড. তপন কান্তি দাশ’র ভূমিকা ও অবদান সম্পর্কিত অনুভূতি প্রকাশের ভাষা থেকে ক্রমাগত ভাবে উৎসারিত হয়েছে। তাই মানবিকতার এ মহান কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে অমানবিকতা মানুষের হৃদয় থেকে বিতাড়িত এবং মানবতার স্থাপনা হোক প্রতিটি মানুষের অন্তরে। আমরাও আমাদের স্ব-স্ব অবস্থান থেকে এড.তপন কান্তি দাশের এ মানবিক স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার মাধ্যমে এড. দাশ’র মতো দেদীপ্যমান নক্ষত্রের চারপাশে মানবিকতার আকাশে তারা হয়ে জ্বলতে চাই।মানবিকতার বাতিঘর এড.তপন কান্তি দাশের আর্দশকে ধারণ করে মানবতার যুদ্ধে সামিল হই, যেখানে শ্রীগীতার ভাষায় বলা যায় “বিজয়ী হলে পাবো দূর্লভ সংসার-সুখ আর পরাজিত হলে মিলবে অনারাদিগোবিন্দের পরমপদের আশ্রয়” যা আমাদের এই মানবকুলের জন্মকে স্বার্থক করে তুলবে। বাগীশিকের উদ্যেগে দেশের ৩৮ জেলায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের হাতে কোথাও ত্রাণ, কোথাও নগদ অর্থ এবং কভিট-19 এর প্রতিরোধক হিসেবে হোমিও ঔষধ বিতরন করে যে নজির স্থাপন করেছে তা সমাজের জন্য উল্লেখযোগ্য না হলেও বাগীশিকের জন্য বিশাল এক পাওয়া। এজন্য বাগীশিকের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা,ইউনিয়ন সংসদ গুলো প্রশংসার দাবি রাখে।