সীতাকুগু প্রতিনিধি,
প্রাচীনতম হিন্দু ধর্মীয় তীর্থস্থান সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরে ঐতিহ্যবাহী শিব চতুদর্শী মেলা শুরু হচ্ছে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে।
তিনদিন ব্যাপী এ মেলায় পূর্ণার্থীদের নিরাপত্তা ও তীর্থস্থানের পবিত্রতা রক্ষায় বিশেষ উদ্দ্যেগ নিয়েছে মেলা আয়োজন কমিটি।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনদিন ব্যাপী শিব চতুদর্শী মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
মেলা কমিটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, কমিটির সাধারণ সম্পাদক পলাশ চৌধুরী। তিনি বলেন, বিশ্বের সনাতন ধর্মীয় জনসাধারনের ঐতিহ্যবাহী সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ তীর্থ একটি অতি পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ পূণ্যস্থান। মেলা হিসেবে পরিচিত হলেও এটি মুলত ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান।
প্রাচীন এ তীর্থস্থানে দেশ বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ পূর্ণার্থীর সমাগম ঘটে বিধায় কালক্রমে এটি বিশাল মিলন মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, শিবচতুদর্শী মেলা সুন্দর, সুশৃঙ্খল, সমন্বয় ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিবছরের ন্যায় এবারও প্রথমে স্থানীয়ভাবে, পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মেলা কার্যনির্বানী কমিটির এবং সর্বশেষ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও মেলা কেন্দ্রীয় কমিটি সভায় চুড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
আগামী ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি শিব চতুদর্শী এবং ৮-৯ ফেব্রুয়ারি দোল পূর্ণিমা অনুষ্ঠিত হবে। সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির পক্ষ থেকে পুরী লজিং এ্যাক্ট অনুযায়ী শিবরাত্রী পূজা অনুষ্ঠানে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। স্রাইন কমিটির পক্ষ থেকে বৈদিক সম্মেলন আয়োজন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, মেলায় সার্বিক আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষার জন্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীতাকুণ্ড সার্কেল শম্পা রাণী সাহা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আলম মোল্লা’র নেতৃত্বে প্রায় ৫শ ৫০ জন পুলিশ এবং বিশেষ করে এবার মহিলা পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া ৩০-৪০ জন মহিলা আনসার-ভিডিপি সদস্য মেলা চলাকালীন সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত থাকবে।
মেলা উপলক্ষে তীর্থ যাত্রীদের আগমনের সুবিধার্থে তুর্ণা নিশিতা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতীসহ অন্যান্য আন্তঃনগর ট্রেন সমুহের যাত্রার ক্ষেত্রে সীতাকুণ্ডে ৩ মিনিট যাত্রা বিরতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তীর্থে মন্দিরসহ মেলায় স্থাপিত দোকান, স্টল, বিনোদন কেন্দ্র সমূহকে অগ্নিকান্ডের হাত থেকে রক্ষা করা ও অসুস্থ তীর্থ যাত্রীদের জরুরী ভিত্তিতে সেবা দেয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ডসহ ফায়ার সার্ভিস বিভাগ সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়া সীতাকুন্ড মেলা কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুবিধাজনক স্থানে পানীয় জলসহ ৩০ টি স্থায়ী-অস্থায়ী টয়লেট ব্যবস্থাপনার চেষ্টা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সীতাকুণ্ড বটতলী কালি মন্দির থেকে ইকো পার্ক হয়ে চন্দ্রনাথ মন্দির, বাড়বকুণ্ড ও লবণাক্ষে যাতায়াতের জন্য বিশেষ যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতা স্বাভাবিক থাকায় এবার মেলায় দেশে-বিদেশের লক্ষ লক্ষ পূর্ণাথীর আগমন ঘটবে বলে আশা করছে মেলা কমিটি।
সংবাদ সন্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সীতাকু্ণ্ড পৌর ব্যাবসায়ী কমিটির সাধারন সম্পাদক মো. বেলাল উদ্দিন, মুুুুক্তিযুদ্ধা আবুল কাসেম ওয়াহিদী, মেলা কমিটির অতিরিক্ত সম্পাদক সমীর কান্তি শর্মা, বাবুল কান্তি শর্মা, কানু কুমার বনিক, বুলবুল লালা, অধ্যাপক রনজিত সাহা প্রমূখ।