আল-আমিন, নেত্রকোণা প্রতিনিধি:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নেত্রকোনার কৃতি সন্তান সাজ্জাদুল হাসান। তিনি পর্ষদের পরিচালক থেকে চেয়ারম্যান হলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব গত ১০ জানুয়ারি ফেয়ারওয়েল এ যান। সোমবার তাকে নিয়োগ দিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক জানান, ‘পরিচালনা পর্ষদে শুধু একটি পরিবর্তনই আনা হয়েছে আর তা হলো সাজ্জাদুল হাসান পরিচালক থেকে চেয়ারম্যান হয়েছেন। পর্ষদের অপর পরিচালকরা অপরিবর্তীত রয়েছেন।’
সাজ্জাদুল হাসান বিমান বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হিসাবে এটিকে একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, দোয়া করবেন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) হিসাবে দ্বায়িত্ব পালনের আগে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, সড়ক বিভাগের যুগ্মসচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
সাজ্জাদুল হাসান বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এনামুল বারীর স্থলাভিসিক্ত হলেন। পর্ষদের অপর পরিচালকরা হলেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেইন ভূইয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক, অর্থ সচিব অব্দুর রউফ তালুকদার, পররাষ্ট্র সচিব (মেরিটাইম এফেয়ার্স) মো. খোরশেদ আলম, এ্যাসিট্যান্ট চিফ অব এয়ার স্টাফ এয়ার ভাইস মার্শাল এ আবুল বাশার, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল ইবনে ফজল শায়েকুজ্জামান, বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হক, আইনজীবী ব্যারিষ্টার তানজিব উল আলম, এমার্জিং ক্রেডিট রেটিং এর এমডি নূর-ই-খোদা অব্দুল মবিন এবং বিমানের এমডি ও সিইও মো. মোকাব্বির হোসেন।
‘ভাটি-বাংলার পরশমণি’ সাজ্জাদুল হাসান ১৯৬১ সালের ১জানুয়ারী নেত্রকোণা মোহনগঞ্জ উপজেলার হাঁটনাইয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রাক্তন গণ পরিষদের সদস্য মরহুম ডা: আখলাকুল হুসাইন আহমদ, মাতা বেগম হুসনে আরা।
তিনি মোহনগঞ্জ পাইলট হাইস্কুল থেকে ১৯৭৬ সালে এসএসসি, ১৯৭৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি অনার্স কৃষি অর্থনীতি এবং ১৯৮৬ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। সরকারী চাকুরিতে যোগদানের পর কৃষি গবেষণা ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ণ সিডনী, অস্ট্রেলিয়া থেকে মাস্টার্স অব সায়েন্স (অনার্স) ডিগ্রী (২০০২) অর্জন করেন।
১৯৮৮ সালে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার হিসেবে জামালপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগদান করেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ছাড়াও চাকুরি জীবনে উল্ল্যেখ যোগ্য হলো: উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাপাসিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ময়মনসিংহ, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার, জেলা প্রশাসক সিলেট,পরিচালক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় যুগ্ম-সচিব যোগাযোগ মন্ত্রণালয় কর্মরত ছিলেন।
২০০৮ সালে তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদে দায়িত্ব পালন করে সিলেটের ১৭তম বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে যোগদান করে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সে দায়িত্ব পালন করেন।
সাজ্জাদুল হাসান ব্যক্তিজীবনে একজন সৎ ও কর্মনিষ্ট ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করেন।
পারিবারিক জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী বেগম লায়লা আরজুমানের সাথে পরিনয় সুত্রে আবদ্ধ হন। তিনি ২ পুত্র সন্তানের জনক। বড় ছেলে সেকেন্ড ল্যাপ্টেন্যান্ড এ কর্মরত এবং ছোট ছেলে স্কুলে অধ্যায়নরত।
তিনি স্কাউটের বেসিক ডিপ: কোর্স সম্পন্ন করেছেন। প্রশিক্ষনের জন্য বিভিন্ন সময়ে ভিয়েতনাম, সিংগাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া, চীন,ইটালী সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, পোল্যান্ড,সৌদি আরব সহ বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেন। ২০১০ সালে তিনি পবিত্র হজ্ব পালন করেন। কৃষি গবেষণার উপর তার ৩ টি প্রকাশনা রয়েছে। তন্মধ্যে ১টি বাংলাদেশের, ভারতের ১টি ও অষ্ট্রেলিয়ার ১টি।
আল-আমিন, নেত্রকোনা
২৮-০১-২০২০
মোবাইলঃ ০১৭২৪৬৫৭৭৩৭