নিজস্ব প্রতিবেদক ,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বুধবার (২২ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।তবে আপাতত শুধু ঢাকার আগারগাঁও, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে এটি দেওয়া হবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সর্বপ্রথম ই-পাসপোর্ট পাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই এ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবে।
“প্রথমে উত্তরা, আগারগাঁও ও যাত্রাবাড়ী থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে এবং পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এ কার্যক্রম চালু হবে।
এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের মধ্যেই সারাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ রয়েছে সরকারের। এছাড়া বিদেশে অবস্থানরতরাও পর্যায়ক্রমে ই-পাসপোর্ট পাবেন।
পাশাপাশি এমআরপি পাসপোর্ট কার্যকর থাকবে বলে জানান আসাদুজ্জামান খাঁন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ই-পাসপোর্ট হবে ৪৮ ও ৬৪ পাতার। আর মেয়াদ হবে পাঁচ ও ১০ বছর মেয়াদী।
৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী সাধারণ পাসপোর্টের (১৫ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে) এর জন্য ফি লাগবে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। আর সাতদিনের মধ্যে (জরুরি) পেতে হলে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও দুইদিনে (অতি জরুরি) পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা।
একই সংখ্যক পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য পাঁচ হাজার, জরুরি সাত হাজার ও অতি জরুরির জন্য নয় হাজার টাকা হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
আর ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট করতে লাগবে যথাক্রমে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি সাত হাজার ৫০০ টাকা ও অতি জরুরি ১০ হাজার ৫০০ টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট করতে লাগবে যথাক্রমে সাত হাজার (সাধারণ), নয় হাজার (জরুরি) ও ১২ হাজার (অতি জরুরি) টাকা।
ই-পাসপোর্ট এর আবেদন অনলাইনে অথবা পিডিএফ ফরমেট ডাউনলোড করে পূরণ করা যাবে। এতে কোনো ছবির প্রয়োজন হবে না; কাগজপত্র সত্যায়নও করতে হবে না।
ই-পাসপোর্ট চালুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৯তম দেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে নানা জটিলতায় কয়েক দফা পেছাতে হয়েছে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরুর দিনতারিখ।
বাংলাদেশে হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট বা এমআরপি প্রবর্তনের পর এক দশকও পার হয়নি। কিন্তু এমআরপির ডেটাবেইজে ১০ আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্ট করার ঘটনা দেখা যায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিক ভোগান্তি কমাতে এবং একজনের নামে একাধিক পাসপোর্ট করার প্রবণতা বন্ধ করতে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) চালু করতে উদ্যোগী হয় সরকার। ২০১৮ সালের ২১ জুন প্রকল্পটি একনেকের সায় পায়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ওই বছরের জুলাইয়ে জার্মান কোম্পানি ভেরিডোসের সঙ্গে চুক্তি করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদপ্তর। সোয়া তিন হাজার কোটি টাকায় বাংলাদেশকে ই-পাসপোর্ট ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করছে তারা।
ই-পাসপোর্ট নামে পরিচিত বায়োমেট্রিক পাসপোর্টে স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যাতে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা বসানো থাকে। এ পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাসপোর্টের ডেটা পেইজ এবং চিপে সংরক্ষিত থাকে।