সোহেল চৌধুরী রানা, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
পায়ে নেই সেন্ডেল-জুতা, পৌষের কনকনে ঠান্ডা! উস্ক-খুস্ক ভাবে হাতে একটি ব্যাগ অপর হাতে লাঠি নিয়ে সাপাহারে বিভিন্ন স্তরের লোকের কাছে অসুস্থ ছেলের মুখে দু মুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য ভিক্ষা চেয়ে বেড়াচ্ছেন দুখিনী মা ফিরোজা বেওয়া (৭০)। তিনি উপজেলার কামাশপুর মোন্নাড়া গ্রামের মৃত কালীমুদ্দীনের স্ত্রী বলে জানা গেছে।
ফিরোজা বেওয়ার সাথে কথা হলে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানান, ২০/২৫ বছর আগে তার স্বামী কালিমুদ্দীন মৃত্যু বরণ করেন। তার পর ফিরোজার তিন সন্তানকে নিয়ে শুরু হয় পথচলা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস , তার এক ছেলে এরই মধ্যে মৃত্যু বরণ করেন। পরবর্তী সময়ে তার আরেক ছেলে শারিরীক ভাবে অসুস্থ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন অপর ছেলে ভালো থাকলেও তার ক্ষুদ্র ইনকাম দিয়ে নিজের সংসার সহ মা-ভাইয়ের খরচ চালাতে অপারগ হয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে ফিরোজা বেওয়া কোন উপায়ান্তর না পেয়ে বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি! এত বছর হওয়ার পরেও কোন বয়স্ক ভাতা বা সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে দির্ঘদিন যাবৎ ভিক্ষাবৃত্তি করে কোন বেলা খেয়ে আবার কোন বেলা না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এই জনম দুখিনী মা ফিরোজা বেওয়া।
বিগত সময়ে তার জমি-জমা থাকলেও কিছু কু-চক্রী মহলের পাল্লায় পড়ে জাল দলিলে স্বাক্ষর করে সর্বস্ব হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরে খাস জায়গায় কোন হালে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে এরকম দুঃসহ জীবন যাপন করছেন তিনি।
এই কষ্ট লাঘবে সরকারী ভাবে কোন ব্যাবস্থা করে দিলে তার কষ্ট অনেকাংশে কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফিরোজা বেওয়া।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কল্যাণ চৌধুরী বলেন, তার বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।