নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার তৃতীয় দিনের শুনানি বৃহস্পতিবার হয়েছে। শুনানির প্রথমার্ধে গাম্বিয়া যুক্তিখণ্ডন করেছে। এর আগে বুধবার আদালতে মিয়ানমার নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে। মিয়ানমারের ওই বক্তব্যকে ‘ফ্রড’ বা প্রতারণামূলক বলে উল্লেখ করেছেন গাম্বিয়ার পক্ষের আইনজীবী পল রাইখলার । রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের জন্য দায়ী সেনাদের বিচার ও সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের উপর আস্থা রাখা যায় না বলেও দাবি করেছেন তিনি। খবর রয়টার্স’র
বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের শুনানির শুরুতে গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন পল রাইখলার। এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমার গতকাল যে বক্তব্য দিয়েছে তা ‘ফ্রড’ বলে অভিহিত করেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমার ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কোন সেনা রোহিঙ্গাদের নির্যাতনে জড়িত থাকলে সে ব্যাপারে অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের বক্তব্য অবিশ্বাস্য বলে উল্লেখ করেন রাইখলার। তিনি বলেন, তাতমাদাও (মিয়ানমার সেনাবাহিনী) রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় কোন সেনা জড়িত থাকলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে এমন আশ্বাস কিভাবে বিশ্বাস করা যায়, যেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইংসহ শীর্ষ ছয় সেনা কর্মকর্তা জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন দ্বারা গণহত্যা করার অভিযোগে অভিযুক্ত।’
রাইখলার বলেন, মিয়ানমার শুনানির সময় তার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা চরম সহিংসতার বেশিরভাগ অভিযোগকে অস্বীকার করার চেষ্টাও করেনি। মিয়ানমারের আইনজীবী গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রমাণের জন্য সাতটি নির্দেশকের কথা বলেছেন। যা গাম্বিয়ার আবেদনেও রয়েছে। এগুলোও মিয়ানমার অস্বীকার করেনি বলে উল্লেখ করেন রাইখলার।
শুনানিতে গাম্বিয়ার পক্ষের প্রধান আইনজীবী আরও বলেন, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি আদালতে রোহিঙ্গা বিশেষণটি একবারও ব্যবহার করেননি। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কথা বলতে গিয়ে তাদের মুসলিম হিসেবে তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল
গণহত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির আগ পর্যন্ত সেখানে ‘অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা’ নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আজ আবারও আবেদন জানিয়েছে গাম্বিয়া।
গত মাসে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন’র (ওআইসি) পক্ষে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যার ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে গাম্বিয়া। দ্য হেগে অনুষ্ঠিতব্য মামলার শুনানির শেষ দিন আজ