মো: আ: হামিদ টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:-
ছেলেধরা সন্দেহে আমার আব্বুকে যারা নির্যাতন করেছে তাদের বিচার চাই, আব্বুকে যারা মারছে তাদের ফাঁসি চাই। কথাগুলো বলছিলেন হতদরিদ্র অটো-ভ্যান চালক মিনু মিয়ার শিশু ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া রাহাত। এই অসহায় মিনু মিয়ার ছেলে রাহাত আরো বলেন, আমার আব্বু ভ্যান চালায়। বন্যার পানিতে বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ভ্যান চালানো বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে সয়া হাটে মাছ ধরার জন্য জাল কিনতে গিয়েছিল। পরে হাটের ভিতরে ছেলে ধরা বলে মেরে গুরুত্বর আহত করেন। এখন আমার আব্বু মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
আজ শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুর ৩ টায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ মানবন্ধনে কান্না জর্জরিত কন্ঠে কথা বলেন মিনু মিয়ার ছেলে। মানবন্ধনে মিনু মিয়ার ছোট বোন বলেন, আমার ভাইকে যারা মারছে তাদের চূড়ান্ত বিচার ও ফাঁসি চাই।
এ সময় মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বাবু, সাংবাদিক আক্তার হোসেন খান, আব্দুল লতিফ তালুকদার, জুলিয়া পারভেজ, ফরমান শেখ, নাসির উদ্দিন প্রমুখসহ মিনু মিয়ার পরিবারের লোকজন ও এলাকার সর্বস্তরের জনগণ। এর আগে সোবমাবর (২২ জুলাই) দুপুরে ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের টেপিবাড়ী মোড়ে গণপিটুনি দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়।
প্রসঙ্গত প্রকাশ ও জানা যায়, মিনু মিয়া ভূঞপুুর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকা টেপিবাড়ির কোরবান আলীর ছেলে । পেশায় তিনি অটো-ভ্যান চালক। সে কালিহাতীর সয়া হাটে গিয়েছিলেন মাছ ধরার জাল কিনতে যায়। হঠাৎ ছেলেধরা সন্দেহে তার উপর উত্তেজিত হয়ে বেধড়ক গণপিটুনি দেয় উপস্থিত জনতা।
রোববার (২১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার সয়া হাটে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। পরে টাঙ্গাইল হাসপাতালে নেওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হলে ঢাকা একটি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে ভূঞাপুরে বন্যা কবলিত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ওই ভ্যান চালক মিনু মিয়াকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির দেয়ার দায়ে ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ৬ ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং আরোও যারা জড়িত আছে তাদের গ্রেফতারের অভিযান চলমান রয়েছে। তিনি আরোও বলেন, এ ছেলেধরা গুজবের বিষয়ে জনগনকে আরোও সতর্ক থাকতে হবে। নিরপরাধ কেউ যেন হামলার শিকার না হন।