শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত দাকোপের সাহেবের আবাদ শ্রীশ্রী কৃষ্ণের রাসমেলায় চতুর্থদিনে সাংকৃতিক সন্ধ্যা ঘোপাল যুবদলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে তিন জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা ঠাকুরগাঁওয়ে মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইএসডিও’র আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ছাগলনাইয়ায় ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার আটক ০১ রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। দেশ চালাবে জাতীয় ঐক্যের সরকার। সনাতনীদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকলকে একত্রিত হতে হবে ছাগলনাইয়া সেচ্ছাসেবক দলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

গাইবান্ধা থেকে বন্যার পানি কমছে না,বাড়ছে দুর্ভোগ-দৈনিক বাংলার অধিকার

অধিকার ডেক্স / ১৫৯ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:১৫ অপরাহ্ণ

রাকিবুল ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধা থেকে বন্যার পানি কমছে না। জেলার বেশিরভাগ অংশ পানিতে তলিয়ে আছে। তালিয়ে আছে কাঁচা-পাকা সড়ক, বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রলম্বিত বন্যার কবলে পড়ে লাখ-লাখ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধ-সড়ক ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলো বাড়ি ফিরতে পারছে না। খাবার নেই। জ্বালানির অভাবে চুলাও জ্বলছে না। বিশুদ্ধ পানির সংকট। পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যায় মানবিক বিপর্যয়ের কবলে পড়েছেন বানভাসিরা। ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগব্যাধি।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে জানা গেছে, জেলার তিন ভাগ এলাকায় পানির নিচে। প্রায় ১৫০০ গ্রাম বানের পানিতে ভাসছে। এসব গ্রামে বন্যাকবলিত হয়েছে প্রায় ৬ লাখ মানুষ। অধিকাংশ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধ-সড়ক-স্কুল ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের কেউ এখন পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পারেননি।
সদর উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বানিয়ার চর বাজার থেকে ভাঙার মাথা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বাঁধের দু’পাশে শত-শত পরিবার কোনো রকমে পলিথিন কিংবা টিনের চালা তুলে তাতে গরু-ছাগল-হাঁস-ম
ুরগিসহ বসবাস করছে। বাঁধে হাঁটার জায়গাটুকু পর্যন্ত নেই। নেই রান্নার জায়গা। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যার ফলে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। লোকজন আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগব্যাধিতে।ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে এসব এলাকায়।
সড়কের পাশে ত্রিপল টানিয়ে কঞ্চিপাড়া গ্রামের আব্দুল গনি স্ত্রী, চার ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ঘরে চাল আছে। রান্নার ব্যবস্থা নেই। ফলে কোনো রকমে কলাগাছের ভেলার ওপরে একবার রান্না করে তাই দু’বেলা খাচ্ছেন। দু’মুটো খাবার জুটলেও টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। অনেক দূরে প্রাকৃতিককর্ম করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
একই গ্রামের বাচ্চানী বেওয়া, শিবনাথ, সত্যবালা, রহিমা বেগম ও তাইজুলের ঘরে খাবার নেই। তারা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে গেলেও কোনো ত্রাণ পাননি বলে জানালেন। এখন কেমন করে চলবেন জানেন না তারা।
রামচন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানালেন, এ পর্যন্ত সাড়ে ১২ টন চাল বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করেছেন। প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় সবাইকে ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। কেননা এই ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের সব প্লাবিত হয়েছে। এমনকি তার বাড়িও পানিতে তলিয়ে আছে।
গাইবান্ধা জেলার প্রায় সাড়ে তিনশর বেশি গ্রামের পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি হয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় বলছে, বন্যায় এ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলার দুটি পৌরসভাসহ ৫১টি ইউনিয়নের ৩৯০টি গ্রামের ৫ লাখ ১৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, যাদের ৪৫ হাজার ৪৯৫টি বসতবাড়ি পানির নিচে। এ ছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ২৩৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ৬৩ কিলোমিটার বাঁধ ও ২১টি কালভার্ট। ডুবে গেছে ১১ হাজার ৯২৮ হেক্টর বিভিন্ন ফসলি জমি।
২২ জুলাই সোমবার ফুলছড়ির কৈতকিরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বানভাসি মানুষ ভেঙে যাওয়া ওই বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধি বা সরকারি কর্মকর্তা তাদের খোঁজখবর নেননি বলে অভিযোগ করেন তারা। সুপেয় পানির ব্যাপক সংকটে পড়েছেন বাঁধে আশ্রিত বানভাসিরা। স্যানিটেশন ও জ্বালানি সংকট রয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা রোগব্যাধি। ফুলছড়ির কঞ্চিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি বেসরকারি সংগঠন রিকশাভ্যানে করে পানির ট্যাংক থেকে বাঁধে আশ্রিত বানভাসিদের পানি সরবরাহ করছেন। এদিকে ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়া পরিবারগুলো নৌ-ডাকাতির শঙ্কায় রয়েছে। অনেক এলাকায় চরবাসী রাত জেগে বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১২ হাজার ৮০৩ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত রয়েছে। রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন সাংবাদিকদের সঙ্গে বন্যা-পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় তিনি জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ৯৫০ টন চাল, ১৫ লাখ টাকা এবং ৫ হাজার ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া বন্যা-পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি নির্মাণে সহায়তা দেওয়া হবে।
গতকাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ৯৩টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ৩৪টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ৫৬টি পয়েন্টে পানি হ্রাস পাচ্ছে। ২০টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। অপরিবর্তিত আছে তিনটিতে।


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!