সুজন কুমার,নাটোর প্রতিনিধি দৈনিক বাংলার অধিকারঃনাটোরে পুলিশে নিয়োগের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া জালিয়াতির দায়ে ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বড়াইগ্রাম উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের সাইদুল মন্ডলের ছেলে ফজলুর রহমান ওরফে রনি, যিনি নিজেকে পরিচয় দেন সমাজ সেবক হিসেবে। মূলত তিনিই হচ্ছেন জালিয়াত চক্রের নাটোর,বগুড়া, পাবনা সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের মূল হোতা। এই জালিয়াতি করেই তিনি গড়েছেন বিশাল অট্টালিকা। এমনটাই দাবি করেছেন নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি জানান, বায়ো-মেট্রিক পদ্ধতিতে পুলিশ নিয়োগ করতে গিয়ে অন্যান্য চাকরির ক্ষেত্রেও জালিয়াতির নানা তথ্য উঠে আসে। পুলিশ সুপার জানান, গত ২২জুন নাটোর জেলায় পুলিশ কনস্টেবল শারীরিক এবং লিখিত পরীক্ষায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় নাইম ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থীর সাথে সংরক্ষিত ছবি এবং আঙ্গুলের ছাপ এর ইমপ্রেশন না পেয়ে পুলিশ পরে পরীক্ষার্থী নাইম ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপর পুলিশ তদন্তে নামে। এসময় পুলিশ সহ বিভিন্ন চাকুরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মুলহোতা ফজলুর রহমান ওরফে রনি সহ মোট ৭জনকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করে পুলিশ। এসময় ৩৬টি সাদা ষ্ট্যাম্প, ১৬টি ব্ল্যাংক চেক এবং বিভিন্ন চাকুরি পরীক্ষার প্রবেশ পত্র জব্দ করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ৪ জন দালাল ও ৩জন চাকুরি প্রার্থী রয়েছে। আটককৃতরা হলেন, পরীক্ষার্থী বড়াইগ্রাম উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে নাইম ইসলাম, গুরুদাসপুর উপজেলার যোগেন্দ্রনগর গ্রামের জামাল প্রামানিকের ছেলে রাব্বী আলী ও একই উপজেলার সাহাপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুল হাদি। এছাড়া চার জন দালাল হচ্ছে, বড়াইগ্রাম উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের সাইদুল মন্ডলের ছেলে ফজলুর রহমান ওরফে রনি, গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর গ্রামের সামছুল মন্ডলের ছেলে রেজাউল ইসলাম, রফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন আলী এবং সিংড়া উপজেলার বিলদহর গ্রামের হারান মন্ডলের ছেলে রওশন মন্ডল।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার। এসময় প্রেস বিফ্রিংয়ে নাটোর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান সহ অন্যান্যেরা উপস্থিত ছিলেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা স্বচ্ছ এবং মেধাবিরা যাতে চাকুরী পায় সেজন্য এবার নিয়োগ পরীক্ষায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। স্বল্প খরচে বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ করায় আমরা এর সফলতা পেয়েছি। এখন থেকে সকল পরীক্ষায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা দরকার। এতে করে প্রকৃত এবং মেধাবিরা চাকুরী পাবে।