|| ১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২১শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
রামগতিতে আ’লীগ নেতাদের দিয়ে কলেজের গভর্নিং বডি গঠনের গোপন বৈঠক; স্থানীয়দের ক্ষোভ
প্রকাশের তারিখঃ ১৭ জুন, ২০২৫
সিরাজুল ইসলাম কমলনগর(লক্ষ্মীপুর)প্রতিনিধি;
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও দোসরদের দিয়ে কলেজের গর্ভনিং বডি গঠনের গোপন বৈঠকের আয়োজন করার অভিযোগ উঠেছে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহাজান তালাশীর বিরুদ্ধে। রামগতি উপজেলার আহমদিয়া কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন, ছাত্রছাত্রী ও অভিবাবকদের মধ্য চরম উত্তেজনা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় ২০ বছর যাবত কলেজটির গর্ভনিং বডি দখল করে আছে রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ ও তার পরিবার। পালাক্রমে তারাই গর্ভনিং বডিতে ছিলেন। যার মধ্যে রয়েছে তার স্ত্রী জাংসেদা জাং চৌধুরাণী, বড় বোনের জামাই একরামুল হক, ছেলে ফারাবী এবং ভাগীনা মো.বাপ্পী। এসময় কলেজের নামে বেনামে সরকারি ও বেসরকারি বরাদ্দের ব্যাপক অনিয়ম হয়। তাদের পরিবারের ইশারায় চলছিল পুরো কলেজ।
স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটি বাতিল করে সরকার। পরে আরেকটি আদেশে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রনালয়। তখন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ এর আপন বোন জামাই আ'লীগ নেতা একরামুল হককে দিয়ে এডহক কমিটি গঠন করেন। এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হলে
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবারো উক্ত ব্যক্তিকে সভাপতি করে এডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে। কমিটি গঠনের গোপন বৈঠক করা হয় অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদের বাসায়। কমিটির অন্যান্য প্রস্তাবিত সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদের বোন রিজিয়া মালেক, ভাগিনা মো:বাপ্পি। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের নানা রকম সরকারি বরাদ্দের দুর্ণীতি ও লুটপাটের তথ্য গোপন রাখতে ফ্যাসিস্ট আ'লীগের ফাঁদে পা দিচ্ছেন এমন মন্তব্য করা হচ্ছে।
গোপন বৈঠকের বিষয়টি জনমতে প্রকাশ পেলে ছাত্র জনতা ও স্থানীয় লোকজন অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন। এতে অধ্যক্ষ গোপন বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি প্রভাষক থেকে ২০২১সালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় মনিরুল হক বলেন, আহমদিয়া কলেজের সভাপতি উপজেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ ছিলেন। বর্তমান অধ্যক্ষ গোপন বৈঠক করে ফ্যাসিস্ট পরিবারের লোকজন দিয়ে কমিটি গঠন করতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে স্থানীয় জনতা শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্য চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
মীর আরাফাত বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্ণীতি লুটপাট করতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দিয়ে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। গতকিছু দিন যাবত কলেজ অধ্যক্ষ গোপন বৈঠক করেন সভাপতির বাসায়। এতে তিনি পূর্ণরায় ফ্যাসিস্ট ও আ'লীগের লোকজন দিয়ে কমিটি করবে মর্মে বিষয়টি জনমতে প্রকাশ পেলে স্থানীয় জনতা, শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন। এতে তিনি গোপন বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহাজান তালাশীর মেঠোফোনে ২-৩ঘন্টার ব্যবধানে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ছৈয়দ আমজাদ হোসাইন বলেন, আহমদিয়া কলেজ ম্যানেজিং কমিটি গঠনে কিছু বির্তকের কথা শুনেছি। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনো কোন তথ্য জানায়নি।
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.