|| ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২০শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে কিশোর গ্যাংয়ের তান্ডবে আতংকিত
প্রকাশের তারিখঃ ১৬ জুন, ২০২৫
রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর অফিস।
কুড়িগ্রাম সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘুমন্ত দম্পতির ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে একদল কিশোর গ্যাং। হামলার শিকার পাঁচগাছি ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা রুমি বেগম (৩৮) ও তাঁর স্বামী মো. আব্দুল করিম (৪২)। বর্তমানে তাঁরা গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রবিবার ভোর রাতে সদর হাসপাতালের ৭ নম্বর কক্ষের মহিলা ওয়ার্ডে আচমকা ৬–৭ জন অজ্ঞাত কিশোর ও যুবক ঢুকে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের দাবি— তারা ঘুমন্ত অবস্থায় রুমি বেগমের ওপর হামলা চালায় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। বাধা দিলে তাঁর স্বামীকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। দুর্বৃত্তরা তাঁদের কাছে থাকা নগদ অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
হামলার সময় কক্ষে থাকা অন্যান্য রোগী ও স্বজনরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করলে দুর্বৃত্তরা তাদেরও হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সংরক্ষণ করেছে।
এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল দুই দিন আগে। পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে তিন কিশোর—সোহেল, ইব্রাহিম ও জামিল—রুমি বেগমের ওপর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। তাঁর কপালে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে চারটি সেলাই পড়ে। সে সময় উত্তেজিত জনতা তিন কিশোরকে আটক করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ অভিভাবকদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়।
কিন্তু সে ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই হাসপাতালের ওয়ার্ডে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
আহত দম্পতির ভাই মো. আব্দুস সালাম এ ঘটনায় কুড়িগ্রাম সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শহিদুল্লাহ বলেন,
"রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। এ ধরনের হামলা নিন্দনীয়। সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে, আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।"
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ বলেন,"মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এ ঘটনার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.