|| ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
মিরসরাইয়ে নদীগর্ভে যাচ্ছে সিডিএসপি বাঁধ, মৎস্যচাষে বিপর্যয়ের শঙ্কা
প্রকাশের তারিখঃ ২০ এপ্রিল, ২০২৫
বাচ্ছু পাটোয়ারী কমল,মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:মিরসরাইয়ের মৎস্য জোন শিল্প হিসেবে শতশত প্রকল্প গড়ে উঠেছে মূহুরী প্রজেক্ট এলাকায়। ৮০’র দশকে ফেনীর চর জেগে উঠলে সরকারী ভাবে বন্দোবস্ত নিয়ে কয়েক হাজার একর জমিতে শতশত একর মৎস্য প্রকল্প গড়ে উঠে। ১৯৯৪ সালে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিএসপি) আওতায় ১১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সিডিএসপি দিয়ে নদীর ভাঙ্গন থেকে প্রকল্পগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া হয়। বঙ্গোপসাগরের ভাঙন থেকে রক্ষা করতে বাঁধকে ঘিরে বদলে যায় চরাঞ্চলের চিত্র। শত শত মৎস্য প্রকল্প ঘিরে কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। মৎস্য খাদ্য, কর্মসংস্থান, ব্যাংক সহায়তা এবং পরিবহন সহ এ ব্যবসায় সম্পৃক্ত হয়ে বদলে যায় অনেকের ভাগ্য। দেশের রাজস্ব খাতে রাখে বিশাল অবদান।সম্প্রতি সিডিএসপি বাঁধে ভাঙ্গনের তীব্রতায় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ২৫টি মৎস্য প্রকল্প। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ফেনী, মুহুরী নদী ও কালিদাস নদীর সম্মিলিত পানি প্রবাহকে সেচ কাজে লাগাতে এবং ফেনী, সোনাগাজী ও মিরসরাই এলাকাকে বন্যা ও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সেচ প্রকল্পের কাজ ১৯৭৭-৭৮ অর্থ বছরে শুরু হয়ে ১৯৮৫-৮৬ অর্থ বছরে শেষ হয়।সম্প্রতি সেচ প্রকল্পের কয়েকটি গেইট নষ্ট থাকায় নদীর ভাটি এলাকায় পলি জমে সেচ প্রকল্প কার্যকারিতা হারাতে বসেছে। নদীর স্বাভাবিক গতিও বদলে গেছে। ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে সিডিএসপি বাঁধ। অথচ এই বাঁধ দেওয়ার পর এখানকার মানুষ আশায় বুক বাঁধেন। গড়ে তোলেন শত শত মৎস্য প্রকল্প, প্রকল্পে ভাগ্য বদল হয় বেকার তরুণসহ অসংখ্য মানুষের। কিন্তু সিডিএসপির বাঁধে ভাঙ্গনের ফলে তারা এখন দিশেহারা। ভাঙ্গনের তীব্রতার কারণে অনেকেই মাছ চাষ বন্ধ রেখেছেন। ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে বেশকিছু বিদ্যুতের খুঁটি ও সড়কের পাশের গাছ।মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, মৎস্য শিল্প এখানে ব্যাপক আকার লাভ করেছে। বর্তমানে এখানে সরকারের প্রচুর রাজস্ব আয় হচ্ছে মৎস্য জোন থেকে। চাষীদের বাঁচানোর জন্য তাদের প্রকল্প রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের একজন সিনিয়র দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমি মিডিয়াকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নয়। বহু আগে নদীর চর জেগে উঠলে সিডিএসপি বাঁধের বাইরে নদীর কাছাকাছি স্থানীয় মৎস্য চাষীরা নিজস্ব অর্থায়নে একটি বাঁধ নির্মান করে ভিতরে মৎস্য প্রকল্প গড়ে তোলে । সে বাঁধ সম্পর্কে আমরা উচ্চ পর্যায়ে ৪মাস আগে রিপোর্ট করেছি। আমাদের বাঁধে সমস্যা হলে আমরা মেরামত করতে পারি। মৎস্য চাষীদের নিজস্ব অর্থায়নে দেওয়া বাঁধে সমস্যা হলে আমাদের অর্থায়নে করার জন্য বরাদ্দ পাবোনা। আমি আগামী সপ্তাহে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দেখে এসে আবার প্রতিবেদন পাঠাবো।
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.