|| ১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২১শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
ভৈরবে এমইউএসটি’র মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ
প্রকাশের তারিখঃ ২৬ মার্চ, ২০২৫
মোঃ আলী সোহেল, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ডা: মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (এমইউএসটি)’র আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৬ মার্চ বুধবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে এইসব কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ আজিজুল হক।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জিল্লুর রহমান প্রিমিয়ার ব্যাংক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ উদ্দিন আহমেদ, এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার ও ভৈরব প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক সাংবাদিক মোস্তাফিজ আমিন, দৈনিক প্রথম আলো’র নিজস্ব প্রতিবেদক ও ভৈরব বইমেলা পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক মো. সুমন মোল্লা।
বিশ^বিদ্যালয়ের ডিজিটাল কনফারেন্স রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ফেকালটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিন মো. আশেক আল আজিজ।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশিদ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ডক্টর এএফএম নাজমুস সাদাত এবং শিক্ষার্থী সাবিকুন্নাহার সায়মা, ওয়াজিদ রহমান রাফতি, মেহেদি হাসান মারুফ প্রমুখ।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, দেশের মানুষের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ও বীরত্বপূর্ণ ইতিহাস হলো মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ। যার মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা আমাদের বীরত্ব, সৌর্য্য-বীর্য বিশ^ দরবারে উপস্থাপন করি। একটি সুপ্রশিক্ষিত ও আধুনিক অস্ত্রেসজ্জিত পেশাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনি। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।
কিন্তু একটি মহল সেই মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ আর ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে গুলিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। একাত্তরের অর্জনকে ২৪ এর সাথে তুলনা করে মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমূল্যায়ণ করতে চাচ্ছে। যা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যায় না। এই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
বক্তারা বলেন, ২৪ এর জুলাই বিপ্লবে একটি ফ্যাসিবাদি সরকার ও তার দোসরদের পরাজয় ঘটেছে। দেশের স্বাধীনতা অর্জন হয়নি। নিজস্ব ভূ-খন্ড আর জাতীয় পতাকার জন্ম হয়নি। তবে জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধরাও জাতির বীরসন্তান। তাদেরকেও আমরা শ্রদ্ধা জানাই।
বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীনতা মানেই আমার যা খুশি তাই করা নয়। স্বাধীনতা মানে একটি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি। বাক-স্বাধীনতা, বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধের উন্নতি। শোষণহীন, নিরাপদ, মানবিক এক রাষ্ট্রকাঠামো।
কিন্তু স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর কেটে গেলেও আমাদের এখনও এইসব অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে হয়। রক্ত ঝরাতে হয়। অকাতরে দিতে হয় প্রাণ।
আলোচনা সভায় অতিথিরা বাঁশগাড়ি গ্রামের মতো একটি প্রত্যন্ত এলাকায় শতএকর জমির উপর এমন একটি অত্যাধুনিক অবকাঠামোর উপর বিশ^বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করায় দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা.এইচ বিএম ইকবালের ভূয়সি প্রশংসা করেন।
আলোচনা শেষে মহান স্বাধীনতা দিবসের সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা। প্রতিযোগিতায় প্রথমস্থান অধিকার করেন ইইই বিভাগের দ্বিতীয় বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াজিদ রহমান রাফতি, দ্বিতীয় হয় বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আসাদুল্লাহ ও তৃতীয় হয় একই বিভাগ ও ব্যাচের ওমর ফারুক।
দ্বিতীয় পর্যায়ে সংবর্ধনা প্রদান করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভৈরবের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার, উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. তোফাজ্জুল হককে।
সংবর্ধনার জবাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জুল হক বলেন, মহান স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রস্তুত হয়নি। সরকার পরবর্তন হলে তালিকা কাট-ছাট হয়। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় তিনভাগ মারা গেছেন।
আগামী ১০ বছর পর এই একভাগও আমরা থাকবো না। তখনও দেখা যাবে তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে নতুন করে। এটা খুবই দু:খজনক। এ সময় তিনি তাকে সংবর্ধিত করায় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
সবশেষে অনুষ্ঠানে আগত অতিথি অধ্যক্ষ শরীফ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক মোস্তাফিজ আমিন ও সাংবাদিক সুমন মোল্লাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথি তিনজনকে ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে বরণ করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আজিজুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সিনিয়র প্রভাষক ড.এনামুল হক ও প্রভাষক ময়ূরাক্ষী চৌধুরী।
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.