|| ৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ৫ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
হাইমচরে আগুনে পুড়ে ২৬ টি দোকান বশীভূত প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
প্রকাশের তারিখঃ ৪ মার্চ, ২০২৫
মোঃ হোসেন গাজী,হাইমচর চাদঁপুর।
হাইমচর উপজেলার ২ নং উত্তর আলগী ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামে কে ভিএন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মার্কেটে আগুন লেগে ২৬ টি দোকান পুড়ে বসিভূত। দোকান ও মালামালসহ প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে। গত ৩ মার্চ রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার সময় আগুনের এমন দুর্ঘটনা ঘটে। আগুনের লেলিহান শেখা ছড়িয়ে পড়ে পুরো মার্কেটে। প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে পড়লে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মার্কেটে থাকা মুদি দোকান ফার্মেসি হোটেল সেলুন চায়ের দোকান সহ বিভিন্ন ধরনের প্রায় ২৬ টি দোকান পুড়ে ৬০ লক্ষ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়। মার্কেটে সাতটি দোকান মালিকের প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণঃ ডাক্তার নজরুল ইসলাম রুবেলের ফার্মেসি (১০ লক্ষ), জহিরুল ইসলামের মুদি দোকান (৭ লক্ষ) , ইব্রাহিম চৌকিদারের মুরগীর ও মুদি দোকান (১০ লক্ষ), পরেশ মুদি (৯ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার ), অনিলের চা ও মুদি দোকান(৫ লক্ষ), রাজিব কনফেশনারী (৪ লক্ষ) , সুমন হোটেল (১ লক্ষ) , অজয় সেলুন (৭০ হাজার), সেলিম মুন্সি হোটেল (২ লক্ষ), আলমগীর পুচকা (৩০ হাজার), ভুট্টো চাদোকান (৫০ হাজার), অমর আলী মুদি দোকান (৪ লক্ষ) , পলাশ মালি সেলুন (৩০ হাজার), বন্ধু মহল ক্লাব , দুল্লাল চৌকিদার সারের ডিলার (৫ লক্ষ) , সিদ্দিক গাজী মটর গ্যারেজ (২ লক্ষ ৫০ হাজার), অনাত প্রদীপ চা দোকান (৫০ হাজার), ফারুক পাটওয়ারী ভ্যারাইটিজ স্টোর (১লক্ষ ৫০ হাজার), জাহাঙ্গীর হোসেন লাইব্রেরি (৫ লক্ষ)। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ইব্রাহিম চৌকিদার জানান, মানুষের ডাক চিৎকার শুনে দ্রুত দোকানের কাছে ছুটে আসি। এরপর আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাই। আগুনে আমার মুদি দোকানের প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আরেক ফার্মেসী ব্যবসায়ী ডাক্তার রুবেল হোসেন জানান, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দোকানে আগুন লাগার খবর ফোনে দ্রুত ছুটে আসি এরপর আগুন দেখে আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। দোকানের ভিতরে নগদ তিন লক্ষ টাকা ও মালামাল সহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
অভিযোগের সুরে আরেক ব্যবসায়ী জানান, আগুন লাগার বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হলে তারা এসে আগুন নিভানোর চেষ্টা করলে তাদের সাথে থাকা ইঞ্জিন ত্রুটি থাকায় আগুন নিভাতে সক্ষম হতে পারেনি। এবং বিদ্যুৎ অফিসে কল করেও তাদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করা যায়নি। এতে করে আগুন থেকে কোন কিছুই রক্ষা করা যায়নি। আগুনের তাপ তীব্র হওয়ায় পার্শ্ববর্তী কেভিএন উচ্চ বিদ্যালয় সেনেটারী পাইপের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আগুন নিভাতে রাতেই আন্তর ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তারা দ্রুত ছুটে আসেন। পরদিন সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দুর্ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন।
হাইমচর উপজেলা ফায়ার স্টেশনের ফিডার রতন শেখ জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে যাই। আমাদের সংরক্ষণে থাকা পানি সরবরাহ করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। এছাড়াও অতিরিক্ত পানি সরবরাহের জন্য যে পাম্প আমরা ব্যবহার করে থাকি তাতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে আমরা পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ ফায়ার স্টেশন এর সহযোগিতা নেই এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা জানান, আগুনে পুড়ে দোকান ক্ষয়ক্ষতি সারা জমিনে এসে দেখেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। কিভাবে আগুন লেগেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে।
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.