|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
ডায়মণ্ড হারবারে স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র ভান্ডারী ও শহীদ মাতঙ্গিনী হাজরার জন্মদিন পালন*
প্রকাশের তারিখঃ ১৯ অক্টোবর, ২০২৪
*জেলা সাংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে শোভাযাত্রা সহকারে ও প্রতিকৃতিতে মাল্যদান,আলোচনার মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র ভান্ডারী ও শহীদ মাতঙ্গিনী হাজরার জন্মদিন পালন*
* প্রতি বছরের মতো এবারও ডায়মণ্ড হারবার ঋষি অরবিন্দ উদ্যানে স্বাধীনতা সংগ্ৰামী চারুচন্দ্র ভাণ্ডারী ও শহীদ মাতঙ্গিনী হাজরার জন্মদিন পালন করা হলো। এদিন দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা সংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে বঙ্গীয় হেলে/হেলিয়া/চাষী কৈবর্ত-মাহিষ্য সমাজের সহযোগিতায় এই আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের শুরুতে শোভাযাত্রা সহকারে খাদি ভাণ্ডারের সামনে চারুচন্দ্র ভাণ্ডারীর আবক্ষ মূর্তিতে ও শহীদ মাতঙ্গিনী হাজরার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং ঋষি অরবিন্দ উদ্যানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পৌরোহিত্য করেন অধ্যাপক মাধাই বৈদ্য,তিনি উভয়ের কর্মজীবন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করেন। বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমাজকর্মী তপনকান্তি মণ্ডল তাঁর আলোচনায় উভয়ের নিখাদ দেশ প্রীতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন চারুচন্দ্র ছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার ভূমিপুত্র, উচ্চ শিক্ষিত, বলিষ্ঠ ও দীর্ঘদেহী, মহাত্মা গান্ধী ও আচার্য বিনোবা ভাবে-র ভাবশিষ্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম, এ, এবং বি,এল, ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি কিছু দিন ডায়মণ্ড হারবার কোর্টে ওকালতি করেন। ১৯৩০ সালে লবণ সত্যাগ্ৰহ আন্দোলনের সময় তিনি সরাসরি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন এবং বিভিন্ন সময় কারাগারে তাকে কাটাতে হয়। তাঁর রাজনৈতিক গুরু ছিলেন ডায়মণ্ড হারবার কোর্টের আইনজীবী ও মহকুমা কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি গঙ্গাধর হালদার। স্বাধীনতার পর তিনি পশ্চিম বঙ্গের প্রথম খাদ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে সমস্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করে সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন শুরু করেন তিনি। তাঁর শেষ জীবন কাটে সর্বোদয় ও ভূদান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।এই সময় তিনি নিজের সমস্ত বিষয় সম্পত্তি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দান করে দেন। অপর দিকে গঙ্গার ওপারে মেচেদার নিকটবর্তী হোগলা গ্ৰামের ঠাকুরদাস মাইতির কন্যা বিবাহ সূত্রে তমলুকের নিকটবর্তী আলিনান গ্ৰামের বাসিন্দা মাতঙ্গিনী হাজরা প্রথাগত শিক্ষায় পিছিয়ে থাকলেও দেশের কাজে তিনি বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন, একাধিকবার কারাবাস ও করেছেন। শেষমেশ ১৯৪২ সালে তমলুক থানা দখল কর্মসূচিতে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁকে অনেকেই ফ্রান্সের জোয়ান অব আর্কের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। দেশবাসী হিসাবে এই পূতঃ চরিত্রের ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আজ আমরা ধন্য। শিক্ষক ও সমাজকর্মী সিদ্ধানন্দ পুরকাইত বলেন, অনগ্ৰসর সমাজ থেকে উঠে আসা যেসকল মানুষ দেশ সেবা ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে এখনও তাঁদের উপযুক্ত মর্য্যাদা দেওয়া কিংবা ইতিহাসে সেভাবে মূল্যায়ন হয়নি। চারুচন্দ্র ভাণ্ডারী ও মাতঙ্গিনী হাজরাও এর ব্যতিক্রম নয়। এ বিষয়ে তিনি সমাজের শিক্ষিত সচেতন মানুষদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এছাড়াও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সঞ্জয় গায়েন, নীলরতন মণ্ডল, প্রণব দাস, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত সরদার প্রমুখ।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.