|| ৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ৩রা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
পাঁচবিবিতে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০
প্রকাশের তারিখঃ ১৭ অক্টোবর, ২০২৪
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানা ছাত্রদলের সাবেক
সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডিপনের উপর হামলা ও মারপিটের ঘটনায় পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম ও ছাত্রদল নেতা শামীম হোসেনের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
এতে দু'পক্ষের অন্তত দশ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা আধুনিক হাসপাতালে ও বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল পাঁচটার দিকে পাঁচবিবি পৌর শহরের দানেজপুর এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে বিএনপির অফিসে ঢুকে চেয়ার ভাঙচুর করে উত্তেজিত ছাত্রদল নেতা শামীমের অনুসারী নেতাকর্মীরা।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.বেলায়াতে হোসন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কাওসার আলী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিএনপির দু'পক্ষের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গে করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মী সূত্রে জানাযায়, সোমবার (১৪ অক্টবোর) রাতে পাঁচবিবির তিনমাথা এলাকায় অবস্থান করছিলেন সাবেক থানা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডিপন। ডিপন ছিলেন ছাত্রদল নেতা শামীমের অনুসারী। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সেদিন রাতে বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিমের নেতৃত্বে ডিপনকে মারপিট করলে তার মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুত্বর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সাবেক জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেনে নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলের জন্য অবস্থান করছিলেন।
অন্যদিকে পৌর শহরের দানেজপুর এলাকায় বিএনপি নেতা জিয়াউল ফেরদৌস রাইটের চাতালে পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা সভা করছিলেন। আলোচনা শেষে এক পর্যায়ে ডালিম ও শামীম গ্রুপের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় অন্তত দশ জন নেতাকর্মী গুরত্বর আহত হয়েছেন বলে জানান বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম।
পাঁচবিবি পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউল ফেরদৌস রাইট অভিযোগ করে বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমার চাতাল মিলে আলোচনা শেষে যে যার মতে চলে যাই। তখন শামীমের নেতৃত্বে প্রথমে আমার ভাইকে মারপিট করে টাকা ছিন্তাই করে নেয় এবং পরে আমার ভাতিজাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মারপিট করে চলে যায়। এসময় আমার ভাতিজা গুরুত্বর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়। এদিকে হামলার সময় অন্তত ৭ টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তারা। আমি এঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।
পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম সাবেক ছাত্রনেতা ডিপনকে মারপিটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সেদিন রাতে আমি দলীয় কাজ শেষে বারোয়ারী চত্বরে যাই সেখানে শামীম ও গফুর আমাকে উদ্দেশ্য করে অবাঞ্ছিত ভাষায় কথা বলে। আমি তাদের কথা কর্নপাত না করে বাসায় চলে আসি। এসময় আমার নেতাকর্মীরা অসন্তোষ ছিলেন। পরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবগত করি। ডিপন নামের ওই ছেলেকে কে বা কাহারা মেরেছে সেটা আমার জানা নেই।
সাবেক ছাত্রদল নেতা শামীম হোসেন বলেন, সোমবার (১৪ অক্টবোর) রাতে সাবেক থানা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডিপনকে বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিমের নেতৃত্বে মারপিটের ঘটনায় আমরা মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে প্রতিবাদ মিছিল করছিলাম তখন প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের উদ্দেশ্য ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন আমরা আত্মরক্ষার্থে আমরাও প্রতিরোধ করি। এসময় বেশকয়েকজন আহত হয়েছে।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলী বলেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিএনপির দু'পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থ গিয়ে ছত্র ভঙ্গে করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এঘটনায় রকি নামে একজন বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছে। মামলাটি তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.