|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
সমতাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা হলে সংখ্যালঘুরা দেশ ছাড়বে কেন? রানা দাশগুপ্ত’
প্রকাশের তারিখঃ ২৩ আগস্ট, ২০২৪
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত৷ সঙ্গে রেখেছেন সংখ্যালঘুদের জন্য সাম্য, সামাজিক ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবিও৷
বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতিতে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কতটা হামলার শিকার হয়েছে?
রানা দাশগুপ্ত: আমরা লক্ষ্য করি যে, ৫ তারিখ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরেই যে ঘটনা শুরু হয়েছে, তা না৷ আমরা তার আগের দিন, ৪ তারিখে, সন্ধ্যেবেলার দিক থেকে, অন্তত পাঁচটি জেলায় মানুষের কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই৷ এবং তারা আমাদেরকে নানান সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাগুলো বিবৃত করেছেন৷ ৫ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত সময়টা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ সময়৷
আমরা এবারের ঘটনায় দেখেছি এই পর্যন্ত, আমাদের কাছে যা খবর, আমরা যখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টা পরিষদের সকলের সাথে শপথ নিলেন, তার পরের দিন আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার কাছে একটা খোলা চিঠি দিলাম৷
এই খোলা চিঠিতে সেই সময় আমরা বলেছিলাম, আপাতত যে তথ্যগুলো আমাদের কাছে আছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ নয়৷ এটি একটি আংশিক প্রতিবেদন৷ এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে যে ৫২টি জেলা আক্রান্ত হয়ে গেছে৷ এরপর কিন্তু ওই যে হামলার ঘটনা কমে এসেছে, ঠিক৷
কিন্তু এরপর (শুরু হয়েছে) চাঁদাবাজি৷ চাঁদা না দিলে দেশ ছাড়ার হুমকি৷ এবং এর পরবর্তী পর্যায়ে, গত দুই তিন দিন ধরে জোর করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং নানান প্রতিষ্ঠানে যেসব সংখ্যালঘুরা শিক্ষক, অধ্যাপক, অথবা চাকুরিজীবী অফিসার, এভাবে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত আছেন, জোর করে তাদের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রগুলো লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷ এবং এটি এখন অব্যাহত গতিতে চলছে৷
‘শিক্ষক, অধ্যাপকদের জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে‘
কেউ কেউ কিছু অতিরঞ্জিত হামলার খবর প্রচারিত করছেন৷ এগুলো প্রকৃত সহিংসতা বা নিপীড়নের ঘটনার ওপর কোনো প্রভাব ফেলছে?
অবশ্যই পড়বে, কারণ, তখন সত্য ঘটনা আড়াল হয়ে যায়৷ এগুলো যারা করেছেন, কেন করেছেন, উদ্দেশ্যটা কী, তারাই ভালো বলতে পারবেন৷ তবে সত্য ঘটনাকে আড়াল করার এটা একটা (চেষ্টা)৷
একদিকে, আমি সত্য ঘটনাকে অস্বীকার করলাম৷ আরেক দিকে সত্য ঘটনাকে রঙ চড়িয়ে বললাম৷ উভয়ের মধ্য দিয়ে যেটা হয়, সেটা হচ্ছে প্রকৃত বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা৷
ভারতীয় উপমহাদেশে এক দেশের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি অন্য দেশে কী প্রভাব ফেলে?
আজকে নিজেদের দিকেও তাকাই৷ আজকে যদি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর উদ্দেশ্যে এমন সহিংসতা না হতো, এই যে ভারতে যে প্রচারণাগুলো চালানো হয়েছে, সেই প্রচারণার কোনো ভিত্তি থাকতো? তাহলে এই জায়গায় দুই রাষ্ট্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, রাষ্ট্র পরিচালনায়অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ নীতি প্রতিফলিত হবে কিনা৷ যদি এটা প্রতিফলিত হয় এবং সব দেশ যদি করে যে, আমার দেশের ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুরা, তারা সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও মানবিক মর্যাদা তাদের জন্য নিশ্চিত হবে৷ এবং এটা সবার জন্য প্রযোজ্য৷
অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তঅ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ।
আজকে আপনাদের মনে রাখতে হবে, এই যে ২৭ বা ২৮ দশমিক ৭ ভাগ, যা আজ ৮ দশমিক ৬ ভাগে নেমে এলো, এতে কিন্তু স্পষ্ট যে, এ দেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হারিয়ে গেছে৷ কেন হারাচ্ছে? যদি প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা থাকতো, যদি সমতাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা থাকতো, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা থাকতো, বিচারব্যবস্থায় যদি আপনার দায়মুক্তির সংস্কৃতি যদি না থাকতো, তাহলে সংখ্যালঘুরা দেশ ছেড়ে যাবে কেন
সুএ :ডয়চে ভেলে
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.