|| ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
রংপুর কারাগারে সংঘর্ষ নিহত ১ : তদন্ত কমিটি গঠন, ২ কারারক্ষি বরখাস্ত
প্রকাশের তারিখঃ ১৬ আগস্ট, ২০২৪
কারারক্ষিদের পিটুনিতে একজন যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ প্রাপ্ত কয়েদীর মৃত্যুর ঘটনায় রংপুর কারাগারে ব্যপক বিক্ষোভ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে বিপুল পরিমান সেনাবাহিনী র্যাব, পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তারা। ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিনি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনয় অভিযুক্ত দুই কারারক্ষিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। রংপুরের ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, সকাল ৮ টার দিকে কারাগার ক্যাম্পাসের গাছ থেকে আমরা পারা নিয়ে প্রথমে কথাকাটাকাটি হয় বন্দি রফিকুল ইসলামের সাথে বাহারাম বাদশা নামের আরেক কয়েদীর। এসময় রফিকুলকে ব্যপক মারধোর করে বাহারুল। এঘটনা দেখে বাহারাম বাদশাকে ( কয়েদি নম্বর ৯৮০০) বেদম মারপিট ও পিটুনি দেয় দুই কারারক্ষি। গুরুতর আহত অবস্থায় সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে ব্রথ ডেড ( হাসপাতালে ভর্তির আগেই মৃত্যু) ঘোষণা করেন। বাহারাম বাদশা রংপুরের পীরগঞ্জের বগেরবাড়ি এলাকার বাহাদুর মিয়ার পুত্র। বাহারাম ২০০৮ সালের একটি হত্যার মামলার ( জিআর ২১৯/৮) যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ প্রাপ্ত কয়েদি। ২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালত বাহারামসহ একই পরিবারের ৪ জনের যাবজ্জীন দন্ডাদেশ দেয়। ডিসি মোবাশ্বের হাসান আরও জানান, বাহারামের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সব কয়েদিরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। দুপুরে গোসলের সময় সকল কয়েদী একত্রিত হয় মারধোরকারী কারারক্ষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। এসময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কারাগারে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাকে জানালে আমি সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙখলা বাহিনীর সহযোগিতা নেই। বেলা সাড়ে ১২ টায় বিপুল পরিমান সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্য কারাগারে অবস্থান নেয়। উত্তেজনা থামাতে ছোড়া হয় ফাঁকা গুলি। এক পর্যায়ে সেখানে আসেন ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল হাসান। তিনি বন্দীদের উত্তেজনা প্রশমিত করতে তাদের সাথে কথা বলেন। এসময় বন্দিরা বাহারাম হত্যাকারীদের বিচার, খাওয়া দাওয়া এবং ওষুধ পত্র নিম্মমানের বিষয়টি জিওসির কাছে তুলে ধরেন। এছাড়াও কারাগারের বিভিন্ন অনিয়ম এবং কারারক্ষীদের কথায় কথায় মারপিট ও দুর্ব্যবহারের বিষয়ে অভিযোগ করেন। জিওসি তাদের কথা শোনেন । বেলা ১ টায় জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল হাসান বন্দিদের সামনে তাৎক্ষণিকভাবে ডিসির নেতৃত্বে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেন। ঘটনাস্থলেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয় নায়েক শাহজাহান আলী এবং কারারক্ষি মোতালেব হোসেনকে। বিষয়টি কারারক্ষিদের জানিয়ে দেয়া হলে উত্তেজনা থেমে যায়। কারারক্ষিরা বিক্ষোভ থামিয়ে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করেন। বেলা দেড়টার দিকে কারাগার থেকে চলে যান জিওসি। ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান আরও জানান, কারাগারের ভিতরে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কোন বন্দি চলেও যায় নি। আমার নেতৃত্বে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি পুরো ঘটনাটির নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত করবে। পরিস্থিতি শান্ত আছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসলেও কারাগারের ভেতরে এবং বাইরে মোতায়েন আছে বিপুল পরিমান সেনাবাহিনী, র্যাব পুলিশসহ আইনশৃঙখলা বাহিনীর সদস্য।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.