|| ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ৯ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
দিল্লিতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব বিবৃতি দিচ্ছেন, তা দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অন্তরায়।
প্রকাশের তারিখঃ ১৫ আগস্ট, ২০২৪
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা আজ বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব বিবৃতি দিচ্ছেন, তা দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অন্তরায়।
এটা কোনোভাবেই দুই দেশের সম্পর্কের জন্য সহায়ক নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই বার্তা আজ বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। আজ বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেছেন।
এর আগে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, দুই দেশের মানুষের স্বার্থে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে চায় ভারত। ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘আজ শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। কোনো এজেন্ডা ছিল না।’ এ সময় ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়। আগামী দিনে আরও বেশি করে ‘জনগণকেন্দ্রিক সম্পৃক্ততার’ ওপর জোর দেন তিনি। বিশেষ করে সীমান্তে হত্যা বন্ধ, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জোর দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘খুব বেশি অতিরঞ্জিতভাবে’ প্রচার চলছে বলেও উল্লেখ করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত থেকে আসা এ ধরনের বক্তব্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সহায়ক নয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সরকার সব ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতা বা ভীতি প্রদর্শন সহ্য করবে না। তিনি আরও বলেন, সব ধর্মীয় গোষ্ঠী ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা এ জন্যই বলেছি যে সম্পর্ক উন্নয়নে তা সহায়ক হবে না। আমি তাঁকে (ভারতীয় হাইকমিশনার) বলেছি, কারণ সরকারের অবস্থান এটাই।’
ভারতীয় হাইকমিশনার এ বিষয়ে কোনো জবাব দিয়েছেন কি না, এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘উনি এটার জবাব দেবেন কী করে? উনি এ নিয়ে কিছু বলতে পারেন না বলেই আমি মনে করি। রাষ্ট্রদূতের পক্ষে এটার জবাব দেওয়া সম্ভব নয়। সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত দিতে পারে। উনি এটা জানাবেন।’
কোন পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির বিষয়টি আলোচনায় এসেছে জানতে চাইলে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তা স্বস্তিদায়ক হচ্ছে না। আমরা চাই, তিনি যেন ভারতে বসে এটা না করেন।’
সীমান্তে হত্যা নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি তাঁকে বলেছি, সমস্যা আছে, সেটা দূর করতে হবে। মানুষ যেন ভালো বোধ করে। এটা (সীমান্ত হত্যা) এমন একটি ইস্যু, আমরা চাইলে অবশ্যই বন্ধ করতে পারি।
সুএ : প্রথম আলো
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.