|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
চাঁদপুর জেলা পুলিশের বিক্ষোভ
প্রকাশের তারিখঃ ৯ আগস্ট, ২০২৪
সংস্কার চেয়ে ১১ দফা দাবী জানিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব পুলিশ সদস্য মারাগেছেন তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কর্ম বিরতি থাকবেন তারা। তারই অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তারা।
৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে পোষাক বিহীন অবস্থায় জেলা পুলিশের প্রায় শতাধিক অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পুলিশে সংস্কার চাই প্ল্যাটফর্মের ব্যনারে এ বিক্ষোভ করেন।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইয়াসির আরাফাত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রিভার) শ্রীমা চাকমাসহ কর্মকর্তারা বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন।
বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ সদস্যরা ‘আমাদের দাবী, আমাদের দাবী, মানতে হবে, মানতে হবে’ ‘আমাদের কর্মসূচি চলবে চলবে’ ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ‘১১ দফা মানতে হবে, মানতে হবে’ ‘আমার ভাই বাহিরে, খুনি কেন বাহিরে’ ‘জেগেছেরে, জেগেছে, পুলিশ এখন জেগেছে’ বলে স্লোগান দেন। দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষত অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সার্বিক সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবীগুলো হচ্ছে- ১. চলমান ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ হত্যাসহ সব পুলিশি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অতিদ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান, আজীবন পেনশন-রেশন প্রাপ্তি এবং পরিবারের একজন সদস্যের সরকারি চাকরি নিশ্চিত করা।
আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা এবং গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।
৩. পুলিশের নিয়োগ বিধিমালা বিশেষত সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট নিয়োগ পিএসসির অধীনে এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অধীনে কনস্টেবল নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
৪. সাব-ইন্সপেক্টর/সার্জেন্ট পদে বিদ্যমান পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা। সেক্ষেত্রে পুলিশ পরিদর্শক পদ থেকে সহকারী পুলিশ কমিশনার পদে ৩০ শতাংশ সরাসরি এবং ৭০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ এবং সেটি যথাসময়ে নিশ্চিত করা। সাব-ইন্সপেক্টর/সার্জেন্ট থেকে ইন্সপেক্টর পদে পিএল হওয়ার ১ বছরের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানান।
এছাড়া কনস্টেবল/নায়েক/এটিএসআই/এএসআই পদোন্নতির ক্ষেত্রে পরীক্ষায় পাসকৃতদের পরবর্তী বছর পুনঃপরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা বাতিল এবং পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে পাসকৃতদের সিনিয়রিটি অনুসরণ করা।
৫. আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, পুলিশের কর্মঘণ্টা কমিয়ে ০৮ ঘণ্টা করা এবং অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার জন্য ওভারটাইম দেওয়ার ব্যবস্থা করা অথবা বছরে ২টি বেসিকের সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া।
৬. পুলিশের ঝুঁকিভাতা বৃদ্ধিকরণ, টিএ/ডিএ বিল প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে প্রদান এবং প্রযোজ্য সব সেক্টরে সোর্স মানি নিশ্চিত করতে হবে।
৭. পুলিশ সদস্যদের বাৎসরিক ২০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি বৃদ্ধি করে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ৬০ দিন করতে হবে। দেশ এবং জনগণের স্বার্থে ছুটি ছাড়া সম্ভব না হলে অভোগকৃত ছুটির বিনিময়ে আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে হবে।
৮. পুলিশ বাহিনীর প্রচলিত পুলিশ আইন এবং পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল সংস্কার করে যুগোপযোগী এবং কার্যকরী করতে হবে যার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা এবং অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার নিশ্চিত হয়।
৯. পুলিশ বাহিনীকে যেন কোনো দলীয় সরকার তার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।
১০. পুলিশের সব থানা, ফাড়ি এবং ট্র্যাফিক বক্স আধুনিকায়ন করতে হবে এবং অধস্তন অফিসারদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
১১. নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং সব ব্যারাকে বিদ্যমান আবাসন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে ব্যারাকগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.