|| ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক
প্রকাশের তারিখঃ ২০ জুন, ২০২৪
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা বেরি বাঁধের দশানী এলাকা থেকে সাপটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন স্থানীয়রা।
এর আগে ২৮ মে এখলাসপুর ইউনিয়নের নয়ানগর বটতলা এলাকা থেকে ২টি সাপটিকে ধরা হয়। ১৬ মে একই ইউনিয়নের বোরচর এলাকা থেকে একই প্রজাতির আরেকটি সাপ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেশ কয়েকদিন ধরে উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম চরাঞ্চল বোরচরে সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। কিন্তু এবার পূর্ব পাড়ে দেখা মিলল রাসেল ভাইপার সাপের। এর ফলে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের বসবাস করা মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। একের পর এক বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মিলছে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। গত তিন মাসে অন্তত ১০টি রাসেল ভাইবারে দেখা মিলছে এ উপজেলায়।
দশানী গ্রামের মো. মাসুদ রানা জানান, বেড়িবাঁধের পাশে বিষধর রাসেল ভাইপার দেখতে পেরে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে ফেলেছে। এখন এলাকার মানুষ ভয়ে রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করতে পারছে না।
এখলাসপুর এলাকার হুমায়ুন মিয়াজি বলেন, গত ২৮ মে জোয়ারে নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে রাসেল ভাইপার সাপটি বালুর মাঠে চলে এসেছে, সাপটি যখন চলে যাচ্ছিল তখন আমি লোকজন ডাক দিলে তারা এসে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
বোরচর এলাকার কৃষক সুমন বেপারি বলেন, গত ১৬ মে আমার জমিতে ধান কাটতে গিয়ে দেখি ধানের মুঠির নিচে একটি সাপ শুয়ে আছে। সবাই মিলে সাপটিকে মেরে ফেলি। পড়ে দেখি এটি একটি বিষধর রাসেল ভাইপার। ফেব্রুয়ারি মাসে গফুর বাদশার আলু ক্ষেতে আরও দুটি রাসেল ভাইপার সাপ দেখা গেছে।
এ বিষয়ে এখলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম মুন্না ঢালী বলেন, আমি খবরটি পেয়েছি। বেশ কয়েকমাস ধরে আমাদের ইউনিয়নসহ বিভিন্ন জায়গায় রাসেল ভাইপার সাপ ধরা পড়ছে। আমরা এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. হাসিবুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রবোড়া বা উলু বোড়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Daboia russelii) ভাইপারিডি পরিবারভুক্ত একটি অন্যতম বিষধর সাপ। এই সাপ সবচেয়ে বিষাক্ত ও এর অসহিষ্ণু ব্যবহার ও লম্বা বহির্গামী (Solenoglyphous) বিষদাঁতের জন্য অনেক বেশি লোক দংশিত হন। বিষক্রিয়ায় রক্ত জমা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অত্যধিক রক্তক্ষরণে অনেক দীর্ঘ যন্ত্রণার পর মৃত্যু।
তিনি আরও জানান, সাপ সাধারণত ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। তবে চন্দ্রবোড়া সাপ ডিম পাড়ার পরিবর্তে সরাসরি বাচ্চা দেয়। এরা বছরের যেকোনো সময় প্রজনন করে। একটি স্ত্রী সাপ গর্ভধারণ শেষে ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে কোনো কোনো চন্দ্রবোড়া সাপের ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ড আছে।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.