|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র পেয়ে আনন্দিত চরের মানুষ
প্রকাশের তারিখঃ ১৯ মার্চ, ২০২৪
কুড়িগ্রামের দুর্গোম চরাঞ্চলে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র পেয়ে আনন্দিত চরের মানুষ। কুড়িগ্রামের 'রাজীবপুরের চরে চরে,থানা এখন ঘরে ঘরে' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে থানাধীন কোদাল কাটি ইউনিয়নে জন সাধারণের দোরগোড়ায় আইনিসেবা পৌঁছে দিতে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করেছে রাজীবপুর থানা পুলিশ।
যোগাযোগ বিছিন্ন নদী বৌধত কোদালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে সপ্তাহে একদিন (শনিবার) দিনভর থানার কার্যক্রম চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান। গত দু সপ্তাহ ধরে আইনি সেবা দিতে দিচ্ছেন পুলিশ। ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে বসে এমন আইনি সেবা পেয়ে খুশি এখানকার সব শ্রেনি পেশার মানুষ।
জানা গেছে, রাজীবপুর উপজেলাটি কুড়িগ্রাম জেলার একটি বিছিন্ন উপজেলা। উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে বিধস্ত একটি ইউনিয়নের নাম কোদালকাঠি। ১৯৭৩ সালে স্থাপিত ইউনিয়নটিতে প্রায় ৪৬ হাজার মানুষের বসবাস। ভোটার সংখ্যা ১৫৩০০। এখানে রয়েছে ২৯ টি গ্রাম। ব্রহ্মপুত্র নদের জেগে উঠা চরে এই গ্রামগুলোর অবস্থান। যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষজনের ভোগান্তির সীমা নেই। পুলিশী আইনি সেবা পেতে বন্যায় নৌকা ও খড়া মৌসুমে প্রায় ১৫ কিঃ মিঃ পায়ে হেঁটে আসতে হয় রাজীবপুর থানায়। অনেকে এত দূর্গম পথ পারি দিয়ে থানায় আসেন না।ফলে ছোট বড় অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো প্রায় বৃহত্তরে রুপ নেয়। সংঘর্ষ সংঘাতে প্রায়শই প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।এসবের উত্তোরণে ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করেছে রাজীবপুর থানা পুলিশ। ঘরে বসে বিবাধ মিমাংসা নিরসনে পুলিশের এমন ব্যাতিক্রমী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।সহজে আইনি সেবা পাওয়ার জন্য অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্রকে স্থায়ী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আবুবকর বলেন, আমার ভিটেমাটি নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে প্রায় ১০ বছর আগে। এর পর গত ৪ বছর হলো চর জাগে। সেখানে আমার ৬ শতক জমি দখল করে প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাই। গরীব মানুষ মামলা মোকদ্দমা চালানোর সামর্থ নাই। অন্যের জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছি। এখানে থানা কাজ করার খবর পেয়ে বিনা টাকায় একটি অভিযোগ দেই। পরে থানার ওসি বিষয়টি আমলে নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করে দেয়। এখন জমি পেয়ে আমি খুবই খুশি।
স্থানীয় শিক্ষক মোঃ আমিনুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কোদালকাটির মত এমন প্রত্যান্ত চরে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র পেয়ে আমরা অনেক খুশি। থানার ওসি সাহেবসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।শুধু কোদাল কাটিতে নয় সারা দেশের প্রত্যান্ত চরাঞ্চলে এমন আইনি সেবা কেন্দ্র চালু হলে মানুষজন উপকৃত হবে।
কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির ছক্কু বলেন,আমার ইউনিয়নের মানুষজনের সুবিধার্থে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করায় আমরা অনেক খুশি। পুলিশের এমন কার্যক্রম অব্যহত থাকুক।
রাজীব পুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, জেলার সবচেয়ে অবহেলিত ও দারিদ্র্য পীড়িত এ অঞ্চলের মানুষজন খুবই সহজ সরল। কোন দূর্ঘটনা হলে যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়ায় এ ইউনিয়নের মানুষ থানায় আসতে চায় না। তাই সব কিছু বিবেচনা করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সপ্তাহে একদিন এখানে আইনি সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করি। কেননা পুলিশ জনতার। তাদের আইনি সেবা দিতে পুলিশ সব সময় প্রস্তুুত। আমরা জনস্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.