|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
জগদ্দল বিহার” নওগাঁর ইতিহাস
প্রকাশের তারিখঃ ১২ মার্চ, ২০২৪
নওগাঁ জেলা সদর থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরে ধামইরহাট উপজেলার একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান জগদ্দল বিহার (Jagaddal Vihara)। প্রায় নয়শ বছরের প্রাচীন এই স্থাপত্য নিদর্শন স্থানীয়দের কাছে বটকৃষ্ণ জমিদার বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ হিসাবেও পরিচিত। মূলত জগদ্দল মহাবিহার ১১শ থেকে ১২শ শতাব্দীর দিকে প্রতিষ্ঠিত একটি বৌদ্ধ বিহার ও শিক্ষা কেন্দ্র। ঐতিহাসিক সূত্র মতে, একাদশ শতকে রাজা রামপাল ভীমকে পরাজিত করে প্রিয় পিতৃভূমি বরেন্দ্র উদ্ধার করে প্রজা সাধারণের জন্য পাহারপুরের কাছে রাজধানী রামাবতী ও শিক্ষা বিস্তারের জন্য জগদ্দল মহাবিহার (বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেন। পাল শাসনামলের শেষার্ধে স্থাপিত প্রাচীন বাংলার শিক্ষা ও দীক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ এই বিহারে বিভূতিচন্দ্র, আচার্য দানশীল, আচার্য মোক্ষকর গুপ্ত, শুভাকর গুপ্তের মত খ্যাত নামা পণ্ডিতগণ শিক্ষা গ্রহন এবং গবেষণার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন ধর্মমঙ্গল কাব্যগ্রন্থ ও নীহারঞ্জন রায়ের বাঙ্গালীর ইতিহাস গ্রন্থে এই বিহারের কথা উল্লেখ রয়েছে।
জগদ্দল মহাবিহারের দৈর্ঘ্য পূর্ব-পশ্চিমে ১০৫ মিটার, উত্তর-দক্ষিনে ৮৫ মিটার ও উচ্চতা ৫.৪০ মিটার। ১৯৯৭ সালে এই স্থান খননের মাধ্যমে একটি বিহারের আংশিক স্থাপত্য কাঠামো ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রত্নতত্ত্ব আবিষ্কৃত হয়। পরবর্তীতে ২০০০, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে জগদ্দল বিহারের ৩২ টির ও বেশী জায়গায় খনন করে অলংকৃত মূর্তি, ১৩৪ টি প্রত্নতত্ত্ব , ১৪টি ব্রোঞ্জের মূর্তি, পোড়া মাটির টেরাকোটা, ৩৩টি ভিক্ষু কক্ষ ও ৮x৮ মিটার প্রস্থের হলঘর পাওয়া গিয়েছে। আবার একমাত্র এই বিহার থেকেই ৬০ সে.মি পুরত্ব বিশিষ্ট বৌদ্ধ বিহারের ছাদের ভগ্নাংশ ও গ্রানাইট পাথরের পিলার উদ্ধার হয়েছে। এছাড়াও খননের মাধ্যমে আবিষ্কৃত ভিক্ষু কক্ষের প্রবেশ পথে অলংকৃত পাথরের চৌকাঠ, আবার কোথাও কোথাও দেবী কক্ষও দেখা যায়। জগদ্দল বিহার থেকে প্রাপ্ত মূল্যবান প্রত্ন সম্পদ গুলো বর্তমানে পাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। যা ইতিহাস।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.