|| ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
কচুয়ায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও, বিপাকে কয়েকটি পরিবার
প্রকাশের তারিখঃ ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪
নিখোঁজের দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও হদিস মিলেনি চাঁদপুরের কচুয়ার আইনগিরি গ্রামের একপরিবার প্রধান ও স্ত্রী নামে এবং আত্বীয় স্বজনের নামে বিভিন্ন এনজিও কাছ থেকে উত্তোলন ঋণের পরিমান ৪৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তারা বাড়িঘর ফেলে উধাও হয়েছে বলে কচুয়া থানায় অভিযোগ করেন একই বাড়ির নিজ নামে ঋণ উত্তোলন করে দেওয়া লিপি রানী শীল। নিখোঁজ পরিবার উপজেলার গোহট উত্তর ইউনিয়নের আইনগিরি গ্রামের শীল বাড়ির রিংকু রানী শীল, তার স্বামী সনজিত শীল ও ছেলে অনিত শীল।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বিবাদী রিংকু রানী শীল বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে এনজিও হতে টাকা উত্তোলন করে দিতে অনুরোধ করে। আমি সরল বিশ্বাসে সাজেদা ফাউন্ডেশন ও প্রত্যাশা এনজিও হতে ৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করে দেওয়ার পর দুই কিস্তি পরিশোধ করে। আমার নামে দুই এনজিও হতে ঋণ উত্তোলনের টাকা কথা গোপন করিয়া বাড়ির আরেক ঘরের রুমা রানী শীলকে ম্যানেজ করে আরেক এনজিও থেকে তার নামে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করে ৮ কিস্তি পরিশোধ করে। একই কায়দায় বিভিন্ন এনজিও হতে বাড়ির বিষ্ণু রানী শীলের নামে ৫ লক্ষ টাকা, কাজল রানীর নামে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, স্মৃতি রানীর নামে ৬ লক্ষ টাকা, মায়া রানীর নামে ৫ লক্ষ টাকা, দিলিপ শীলের নামে ৭০ হাজার টাকা, রিপন চন্দ্র কর্মকারের নামে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং নয়ন চন্দ্র শীলকে জামিনদার করে ব্র্যাক অফিস থেকে ১০ লক্ষ টাকাসহ সর্বমোট ৪৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেয় রিংকু শীলের পরিবার। বিবাদীরা যথাসময়ে কিস্তি পরিশোধ না করলে তালবাহানা করিলে আমিসহ বাড়ির অন্যান্য ঋণ উত্তোলন কারীরা ও জামিনদার গত ১৯ ই ডিসেম্বর ২০২৩ বিবাদীদের কিস্তির টাকা পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করলে পরে তারা আত্মগোপন করে।
বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ উত্তোলনকারী লিপি রানী শীল, রুমা রানী শীল, বিষ্ণু রানী শীল, কাজল রানী শীল, স্মৃতি রানী শীল, মায়া রানী শীল, দিলিপ চন্দ্র শীল, রিপন চন্দ্র কর্মকার ও জামিনদার নয়ন চন্দ্র শীল জানান, আমরা বিভিন্ন এনজিও থেকে নিজ নামে ঋণ উত্তোলন করে রিংকু রানী শীলকে টাকা দেই। রিংকু ও স্বামী সনজিত দূরন্ত প্রকৃতির লোক। আমাদের সরলতার সুযোগে নিয়ে আমাদেরকে ব্যবহার করে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ উত্তোলন করে তাদের দেই। সে সুযোগে তারা আমাদের মাধ্যমে বিভিন্ন এনজিও থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। উপকার করতে গিয়ে এখন আমরা ঋণ উত্তোলন কারী ও জামিনদার মহাবিপদে পড়ে রয়েছি। এনজিও কিস্তির লোকজন প্রতিনিয়ত আমাদের কিস্তির টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। এমনিতে নিজেরা কোন রকম ধার-দেনা করে সংসার চালাচ্ছি। আবার কিস্তি ওলাদের চাপ কি যে বিপদে আছি সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ জানেনা। এখন আমরা কি করবো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন প্রতিবেদকের কাছে।
এব্যাপারে ¯’স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে তাদের বাড়ির আত্বীয় স্বজনদের মাধ্যমে ঋণ উত্তোলন করে রিংকু শীল ও তার পরিবারকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি এবং আত্মগোপনের বিষয়টিও জানতে পারি।
বিবাদী রিংকু রানী শীলের ব্যবহৃত মোবাইল ০১৮৮৮১৮৭৩৫৩ ও ০১৮১২৮৪২৪৫৭ নাম্বারটিতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এব্যাপরে অভিযোগের তদন্তকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মিজান খানের এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, বাড়ি থেকে চলে যাওয়া ওই পরিবারের সদস্যদের এখনো সন্ধান মিলেনি। তাদের অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ করছে, তবে কোন এনজিও এখনো পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
ছবিঃ রিংকু রানী শীলের ফাইল ফটো।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.