|| ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
পাঁচবিবিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে ঝুঁকছে কৃষক।
প্রকাশের তারিখঃ ২৪ নভেম্বর, ২০২৩
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শীতকালীন সবজি হিসাবে ফুলকপি ও বাঁধাকপির বাম্পার ফলনের আশা করছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকেরা। কম সময় ও অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে ঝুঁকছেন এ উপজেলার চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার পলি এলাকা আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের আয়মা জামালপুর, খাসবাট্টা, আগাইর, মালিদহ, ধরঞ্জী ইউনিয়নের শালুয়া, ধরঞ্জী রতনপুর, বাগজানা ইউনিয়নের খোর্দ্দা গ্রামের কৃষকরা ফুলকপি ও বাঁধাকপি রোপন, নিড়ানী ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, এবার উপজেলায় নিনজা, হোয়াইট মার্বেল, থ্রি স্টার, সিমাকুজি ও স্নো হোয়াইট জাতের ৭০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও নরেশ, সেভেন্টি সহ অন্যান্য জাতের ৬০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি চাষ হয়েছে।
চাষিরা জানায়, জমি চাষ, বীজ, সার, সেচ শ্রমিক খরচ সহ এবার প্রতি বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং প্রতি বিঘায় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ পিচ চারা রোপন করতে হয়। চারা রোপনের প্রায় ৭০—৭৫ দিনেই ফুলকপি আর বাঁধাকপি বাজারজাত করা যায় বলে জানান কৃষকেরা । প্রতি পিচ বাঁধাকপি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, আর প্রতিমণ ফুলকপি বিক্রি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ।
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন প্রকার শীতকালীন সবজির দাম বেশি হওয়াই ফুলকপি ও বাঁধাকপির কদর বেড়েছে সবজি বাজারে। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই চাষিদের। পাইকাররা জমি থেকেই এসব সবজি ক্রয় করে নিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন। এই সবজি অল্প সময়ে স্বল্প খরচেই চাষ করা সম্ভব। তাই কৃষকরা ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে ঝুঁকছেন।
উপজেলার খাসবাট্টা গ্রামের সফল সবজি চাষী বীরমুক্তিযোদ্ধা সানোয়ার হোসেন এবার ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের বাঁধাকপি চাষ করেছেন। তিনি বলেন, আগাম বাঁধাকপি চাষ লাভজনক শীতকালীন সবজি। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এবার একটু দেরিতে চারা রোপন করায় সময়মত উত্তোলন করতে পারিনি। তবে অচিরেই বাজারে বাঁধাকপি তুলতে পারবো।
একই গ্রামের কৃষক বেলাল হোমেন বলেন, সার, বীজ, সেচ ও শ্রমিক মজুরী বৃদ্ধি পাওয়াই এবার প্রতিবিঘা জমিতে চারা রোপনে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে । একই জমিতে গত বছর খরচ হয়েছিল ৭ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। খরচ বাদে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে।
উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামের ফুলকপি চাষি হাজেরা বিবি বলেন, বাজারে এখন ফুলকপি ৩০/৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনিও ভাল লাভের আশা করছেন এবার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, বাঁধাকপি একটি উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি । কৃষকেরা আগাম চাষাবাদ করে ভাল দাম পাচ্ছে । নিরাপদ স্বাস্থ্য সম্মত শাক সবজি উৎপাদনে পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি বিভাগ পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে । আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগামীতে এ সবজি উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে ।
Copyright © 2024 দৈনিক বাংলার অধিকার. All rights reserved.